রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান

কাজী রিয়াজুল হক। প্রথম আলো ফাইল ছবি
কাজী রিয়াজুল হক। প্রথম আলো ফাইল ছবি

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের একমাত্র পথ হচ্ছে এই জনগোষ্ঠীকে মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন করানো। এই মুহূর্তে করণীয় হচ্ছে আমাদের আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও মণ্ডলে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। এতে তারাই মিয়ানমারকে চাপ দেবে তাদের জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নিতে।’

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক কর্মশালায় কাজী রিয়াজুল হক এসব কথা বলেন। ‘রোহিঙ্গা সংকট: পূর্বাপর প্রভাব বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক।

কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর যা হয়েছে, তা মোটেও জাতিগত নিধন নয়। এটা পরিষ্কারভাবে গণহত্যা। কারণ, জেনোসাইড কনভেনশনে গণহত্যার যে পাঁচটি চিহ্নের কথা বলা আছে, তার তিনটিই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) উচিত এই গণহত্যার বিচার করা।’

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের দেশীয় প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি শুরু হয়েছে মিয়ানমারে। তাই এর সমাধানও মিয়ানমারকে করতে হবে। রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের কক্সবাজার এলাকায় ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিকগত অনেক পরিবর্তন এসেছে।

রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েরা মিয়ানমারে ফিরতে চায় না উল্লেখ করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, বাংলাদেশে আসার সময় তাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে এটা ভেবে তারা আর ফিরতে চায় না। কিন্তু কক্সবাজারে খুব বেশি সুযোগ নেই। তাই ভাসানচর খুব ভালো একটি সুযোগ হতে পারে কক্সবাজারের চেয়ে। ভাসানচরে ভূমিধসের ঝুঁকি নেই, যা কক্সবাজারে আছে।’

এনজিও–বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আমাদের সরকার বেশ উদার। তবে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো এখন সরকারের প্রথম প্রাধান্যের বিষয়। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে জোর আওয়াজ তুলতে হবে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে আপনারা অপছন্দ করবেন না।’

অনুষ্ঠানস্থলে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে পাঁচটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগের সীমাবদ্ধতা, ফলাফল ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়।