পুলিশের ওপর হামলা নিয়ে রহস্য

গুলিস্তানে পুলিশের ওপর ককটেল হামলা কে চালিয়েছে, তা নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর আলোচনা ছিল। এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, যেভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে, বিস্ফোরণকারী অনভিজ্ঞ ছিল। নয়তো প্রাণহানির মতো বড় ক্ষতি হতে পারত।

গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের সামনে সড়ক বিভাজকের ওপর ট্রাফিক ছাউনিতে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হন তিন পুলিশ সদস্য। মধ্যরাতে ‘আমাক ওয়েবসাইট’-এ এর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যদের দেখতে যান ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উগ্রবাদ ইস্যুকে কেন্দ্র করে কোনো মহল উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এ কাজ করেছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি আদৌ জঙ্গি-সংশ্লিষ্ট কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে সোমবার রাতে দায়িত্বরত একজন পুলিশ সার্জেন্ট ও অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটের একজন সদস্য বলেছিলেন, হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে এর আগেও পুলিশের ওপর হামলা হয়েছিল। যদিও তাঁরা জানিয়েছিলেন, পুলিশের ওপর ছোড়া ককটেলটি ছিল বেশ শক্তিশালী।

অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিট বলছে, বিস্ফোরণের পর লোহার পাইপের ভাঙা অংশ ও একটি ব্যাটারি পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরকটি একটি টাইমবোমা ছিল। তবে যেভাবে এর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, বিস্ফোরণকারী অনভিজ্ঞ ছিল। নয়তো প্রাণহানির মতো বড় ক্ষতি হতে পারত।

সোমবার সন্ধ্যায় গুলিস্তান চত্বরে (শপিং কমপ্লেক্সের সামনে) দায়িত্ব পালন করছিলেন চারজন ট্রাফিক ও কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য। তাঁদের মধ্যে সার্জেন্ট সুশান্ত কুমার দাস গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার কিছু আগে সবাই মিলে পাশের হোটেল চা খেতে যান। এ সময় বিদ্যুৎ ছিল না। তখন ছাউনিতে ফিরে আসেন তাঁরা। ছাউনির পাশে একটি নিমগাছ ও ট্রাফিক সংকেত খুঁটির বিপরীত পাশে বসে ও দাঁড়িয়ে ছিলেন ট্রাফিক সদস্য নজরুল ইসলাম, লিটন চক্রবর্তী ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্য মো. আশিক। ফিরে আসার মিনিট দুয়েকের মাথায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে নজরুল ইসলাম মাথার পেছনে ও অন্যরা পিঠে আঘাত পান।

সুশান্ত বলেন, ‘২০১৭ সালের দিকে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে গুলিস্তান ট্রেড সেন্টারের সামনে পুলিশের ওপর একবার হামলা হয়েছিল। ওই সময় আমার সঙ্গে লিটনও দায়িত্বরত ছিল। দুজনই হামলার শিকার হই। ওই হামলাকারীরাই এবারও হামলা করে থাকতে পারে।’