জবি থেকে রাসায়নিক গায়েব

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবরেটরি থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার রাসায়নিকের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসনা হেনা বেগমের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিভাগের এক শিক্ষক।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ এপ্রিল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান খন্দকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে তদন্ত কমিটির প্রধান কমিটিতে কাজ করবেন না বলে গত ৩০ এপ্রিল পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার বিভাগের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নতুন করে বিভাগের রাসায়নিক দ্রব্য নিরাপত্তা কমিটির প্রধান অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেনকে তদন্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করবেন।

রাসায়নিক গায়েব হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ জমা দেওয়া প্রভাষক সুকান্ত সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ও বিভাগের চেয়ারম্যানের যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রকল্পের টাকায় এমএসসি ল্যাবরেটরির জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য কেনা হয়। প্রকল্পের কাজ শেষে ১৯টি বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য অবশিষ্ট থেকে যায়। এগুলো শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য রেখে দেওয়া হয়। পরে প্রকল্পে যুক্ত এক শিক্ষার্থী আমাকে জানান, ল্যাব থেকে ১০টি রাসায়নিক দ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে না। এর মূল্য ৫০ হাজার টাকার বেশি। বিষয়টি বিভাগের চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে জানাই।’

লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ এপ্রিল বিভাগের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান খন্দকারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন বিভাগের চেয়ারম্যান। কমিটির অন্যরা হলেন সহকারী অধ্যাপক গোলাম আদম ও মোহাম্মাদ আলী।

তদন্ত কমিটির সাবেক প্রধান অধ্যাপক মনিরুজ্জামান খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ১৮ এপ্রিল তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে আমি তদন্ত কমিটিতে ব্যক্তিগত কারণে কাজ করব না বলে গত ৩০ এপ্রিল পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। পরে বৃহস্পতিবার বিভাগের একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে নতুন তদন্ত কমিটি করা হয়।’

তদন্ত কমিটির নতুন প্রধান অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো তদন্তের কাগজপত্র আমার কাছে স্থানান্তর করা হয়নি। আগামী রোববার ল্যাব পরিদর্শন করে, বাকি সদস্যদের সঙ্গে বসে তদন্তকাজ শুরু করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগে কখনো বিভাগ থেকে রাসায়নিক হারানোর কথা শুনিনি। প্রতিদিন ক্লাস–পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কাজের চাপ থাকে। বিভাগের স্বার্থেই নিরপেক্ষ তদন্ত করে দ্রুত বিষয়টির ফলাফল চেয়ারম্যানকে জানাব।’

বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসনা হেনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগের তদন্ত কমিটির প্রধান কাজ করতে না চাওয়ায় নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আগের তদন্ত কমিটির কাজ বুঝে পেতে কিছুদিন লাগবে। একটি সময় বেঁধে দেওয়া হবে। প্রতিবেদন পেলে স্পষ্ট করে বলা যাবে কী ঘটেছে।’

বিভাগের রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপত্তার চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভাগের নিজস্ব কোনো আয় নেই। এ বছর ভর্তি পরীক্ষা থেকে বিভাগ যে টাকা পাবে, তা দিয়ে রাসায়নিক নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।