পলাতক নোমান গাড়িচালকদের মাধ্যমে ঢাকায় ইয়াবা আনতেন: র‍্যাব

ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি
ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি

গাড়িচালকদের মাধ্যমে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা আনায় অভিযুক্ত সৈয়দ মোহাম্মদ নোমান এখনো পলাতক। র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৩ (র‍্যাব) আদালতকে জানায়, নোমান বড় মাপের মাদক ব্যবসায়ী। তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের উখিয়ার ছাদির কাটা গ্রামে। নোমানের বাবার নাম সৈয়দ আলম।

র‍্যাব-৩–এর উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন আজ শনিবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজারের বিভিন্ন গাড়িচালকের মাধ্যমে চক্রটি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা আনত। তবে বাসচালকদের মাধ্যমেও ইয়াবা আনার তথ্য পাওয়া গেছে।

কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবার চালান আনা মাদক ব্যবসায়ী চক্রের ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ২৭ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় র‍্যাব। মামলাটি এখন ঢাকার আদালতে বিচারাধীন।

অভিযুক্ত ছয় আসামি হলেন কক্সবাজারের সৈয়দ মোহাম্মাদ নোমান (৩৫) ইফতেখারুল ইলাসম (২৫), অলি আহমেদ (২৪), শওকত আলী, আসাদুল্লাহ ফারুক (৩৩) ও নবাবগঞ্জের রানা আহম্মেদ (২৫)। তাঁদের মধ্যে প্রধান আসামি নোমান পলাতক আছেন। বাকিরা কারাগারে।

আদালত সূত্র বলছে, গাড়িচালকের মাধ্যমে ইয়াবা আনার কথা স্বীকার করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন আসামি ইফতেখারুল ইসলাম ও মোস্তফা কামাল।

২০১৮ সালের ২৩ জুন উত্তরা থেকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ চারজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৩। চারজন হলেন ইফতেখারুল ইসলাম, মোস্তফা কামাল, অলি আহম্মেদ ও রানা আহম্মেদ। এ ঘটনায় র‍্যাবের কর্মকর্তা সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোখলেছুর রহমান বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ইয়াবা ব্যবসায়ী নোমান ও ইফতেখারের বাড়ি কক্সবাজারের উখিয়ায়। মামলা হওয়ার দুই বছর আগে ২০১৬ সালে তাঁদের মধ্যে পরিচয় হয়। নোমান ইফতেখারকে প্রস্তাব দেন ঢাকায় যদি ইয়াবার চালান পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে অনেক টাকা তিনি (নোমান) দেবেন। কিন্তু এই প্রস্তাবে রাজি হননি ইফতেখার। উল্টো তিনি নোমানকে প্রস্তাব দেন, ঢাকায় বসে ইয়াবার ব্যবসায় সহযোগিতা করতে পারবেন। ইফতেখারের প্রস্তাবে নোমান রাজি হন। তখন নোমান মামলার অপর আসামি অলি আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

র‍্যাবের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, ‘নোমান বিভিন্ন গাড়িচালকের কাছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার করে ইয়াবা পাঠাতেন। গাড়িচালকেরা ঢাকায় পৌঁছানোর পর সুযোগমতো ইয়াবাগুলো ইফতেখারুলের কাছে পৌঁছে দিতেন।’ ইয়াবার চালান পেয়ে ইফতেখার উত্তরা পশ্চিম থানার একটি বাসায় প্যাকিং করতেন। নোমান এভাবে দুই বছরে ইয়াবার ১০টির মতো চালান বিক্রি করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ইয়াবা বিক্রির হিসাব থাকত ইফতেখার ও নোমানের কাছে। ইয়াবা বিক্রির টাকা নিজের কাছে না রেখে তা নোমানের কাছে পাঠাতেন ইফতেখার। নিরাপদে ইয়াবা বিক্রি করার কারণে অলি আহম্মেদকে প্রতি চালানে ২ হাজার টাকা দিতেন ইফতেখার।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামি আসাদুল্লাহ ফারুকের মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসায়ী নোমানের সঙ্গে পরিচিত হন মোস্তফা। গ্রেপ্তার করার সময় মোস্তফা ও আসামি রানা আহম্মেদের কাছ থেকে ২০ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়।