ইটভাটার আগুনে ফসলের বারোটা

মানিকগঞ্জ সদরে ইটভাটার আগুনে আশপাশের তিনটি গ্রামের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে জেলা কালেকটরেট ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।   প্রথম আলো
মানিকগঞ্জ সদরে ইটভাটার আগুনে আশপাশের তিনটি গ্রামের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে জেলা কালেকটরেট ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা। প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় একটি ইটভাটার আগুনে আশপাশের তিনটি গ্রামের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

পাশাপাশি কৃষকেরা জেলা কালেক্টরেট ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি
পালন করেন।

ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানান, সদর উপজেলার গকুলনগর, সুলন্ডি ও আইরমারা গ্রামে বোরো ধানের ব্যাপক আবাদ হয়ে থাকে। এসব গ্রামের আশপাশে ১২টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটার কালো ধোঁয়ায় ফসলের আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া ফসলি জমির মাটি কেটে এসব ভাটায় নেওয়ায় কৃষিজমির পরিমাণও দিন দিন কমে যাচ্ছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এবার ইট পোড়ানো মৌসুম শেষে রোববার ভোরে স্থানীয় হিজলাইন গ্রামে স্থাপিত ডায়না ব্রিকস লিমিটেডের চিমনির আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ভাটা কর্তৃপক্ষ। এ সময় চিমনির প্রচণ্ড গরম বাতাসে আশপাশের ওই তিনটি গ্রামের প্রায় পাঁচ শ বিঘা জমির ধানের ক্ষতি হয়।

এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষকেরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর তাঁর কার্যালয়ের সামনে নষ্ট হয়ে ধান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন কৃষকেরা। কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে সমাবেশে বক্তব্য দেন কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আজাহারুল ইসলাম, পরিবেশবাদী আন্দোলনের নেতা দীপক কুমার ঘোষ, আইনজীবী শাহাজাহান হোসেন ও জেলা সিপিবির নেতা আরশেদ আলী।

এরপর কৃষকেরা মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। তাঁরা কৃষিজমিতে এসব ভাটা উচ্ছেদ এবং ইটভাটার আগুনে তাঁদের ফসলের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

গকুলনগর গ্রামের কৃষক সোনামুদ্দিন বলেন, ওই ভাটার আগুনে তাঁর ৯৬ শতাংশ জমির ধান বিবর্ণ হয়েছে। একই গ্রামের কৃষক কাজী ফারুক হোসেন বলেন, আগুনে তাঁর ১৫০ শতাংশ জমির বোরো ধানের অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আগুনে বেশ কিছু ধান পুড়ে গেছে। এ ছাড়া আগুনের তাপে অনেক ধান চিটা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ডায়না ব্রিকস লিমিটেডের মালিক সেলিম হোসেন বলেন, ‘কৃষকেরা যে অভিযোগ করছেন, আসলে তাঁদের এতটা ক্ষতি হয়নি। তবু যা ক্ষতি হয়েছে, তা অনিচ্ছাকৃত। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করব।’

জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি ইউএনওকে দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।