পাস করিয়ে দেওয়ার নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ

ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার নামে বগুড়ায় সারিয়াকান্দির চন্দনবাইশা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের সচিবের বিরুদ্ধে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলও করেছে ছাত্রলীগ।

অন্তত ২০ জন পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, উপজেলার চারটি কারিগরি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র চন্দনবাইশা ডিগ্রি কলেজ। এই কেন্দ্রে ফুলবাড়ি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর স্কুল ও অ্যান্ড কলেজ, জোরগাছায় অবস্থিত চন্দনবাইশা মহিলা ডিগ্রি কলেজ, কামালপুর ইউনিয়নের আদর্শ বিএম টেকনিক্যাল কলেজ এবং চন্দনবাইশা ডিগ্রি কলেজের প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন। ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত সোমবার থেকে। গ্রুপ করে তিন দিন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার একটি গ্রুপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীকাল (আজ) আরেকটি গ্রুপের ব্যবহারিক পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে।

পরীক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রসচিব শহিদুল ইসলাম মণ্ডল টাকা ছাড়া কোনো কথা বোঝেন না। কোনো গরিব শিক্ষার্থী কম টাকা দিতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা নেই পড়াশোনা করার কী দরকার। আর অনেক অগে থেকেই ব্যবহারিক পরীক্ষা বিষয়ে এভাবে টাকা দেওয়া রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এভাবে টাকা আদায় করার প্রকিবাদে গত সোমবার চন্দনবাইশা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগও। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ মিছিল হয়।

এই বিক্ষোভ মিছিল সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ চন্দনবাইশা ডিগ্রি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আল আমীন বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম কেন্দ্রসচিব হওয়ার কারণে যা ইচ্ছে তাই করেন। ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে এক থেকে দুই হাজার করে টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত সোমবার কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।

এই কেন্দ্র পরীক্ষা দিচ্ছেন আদর্শ বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ বলেন, তাঁর কলেজের প্রত্যেক কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে নিয়েছেন কেন্দ্রসচিব শহিদুল ইসলাম। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি (শহিদুল) দম্ভের সঙ্গে বলেন, ‘টাকা নিব, আপনার ক্ষমতা থাকলে যা ইচ্ছে করেন।’ এখানে পরীক্ষা দিতে হলে টাকা দিতে হবে।

পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চন্দনবাইশা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রসচিব শহিদুল ইসলাম মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে না। কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো মিছিল সমাবেশ হয়নি। এ ছাড়া অন্য তথ্য আপনাকে দেওয়া যাবে না।

বর্তমানে ওই কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এভাবে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।