ধুনটে আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বালু লুট করার অভিযোগ

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন।  ছবি: প্রথম আলো
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে যমুনার তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ, জনবসতি এবং আবাদি জমি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা ওই বালু উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত সোমবার বিকেলে সরেজমিনে ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালের প্রথম দিকে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের ভূতবাড়ী গ্রামের কাছে যমুনা নদীর ভাঙন ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বগুড়া কার্যালয় প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় এই প্রকল্পের কাজ করেছে। এ কারণে গত দুই বছর যমুনা নদী ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আর কোনো ভাঙন দেখা দেয়নি। এ অবস্থায় ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল বারিক, সদস্য ময়নুল হাসান এবং ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেনসহ কয়েকজন পাঁচ দিন ধরে ভূতবাড়ী গ্রামের কাছে তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় খননযন্ত্র দিয়ে যমুনা নদী থেকে বালু তুলছেন। এতে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ১০-১২ জন বাসিন্দা জানান, ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল বারিকের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা এই বালু তুলছেন। এতে করে যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, বিষয়টি প্রশাসনকে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূতবাড়ী গ্রামের কাছে যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় একটি বাল্কহেড স্থাপন করা হয়েছে। সেই বাল্কহেডে শক্তিশালী দুটি খননযন্ত্র চালু রাখা হয়েছে। উত্তোলন করা বালু দুটি বাল্কহেড দিয়ে পরিবহন করে পাইপের মাধ্যমে ভূতবাড়ী গ্রামের কাছে জমা করা হচ্ছে। সেখান থেকে বালু বিক্রি করছেন উত্তোলনকারীরা।

জানতে চাইলে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল বারিক দাবি করে বলেন, নদী থেকে অন্য লোকজন খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তুলছেন। এর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের কোনো অনুমতি নেই। কারা তুলছে, সে বিষয়ে এখনো আমরা জানি না। ’

ফোন না ধরায় এ বিষয়ে পাউবোর বগুড়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।