বিনা খরচায় ফুটবল প্রশিক্ষণ

ধূপখোলা মাঠে গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত খেলোয়াড়দের অনুশীলন।  প্রথম আলো
ধূপখোলা মাঠে গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত খেলোয়াড়দের অনুশীলন। প্রথম আলো

তাঁরা একসময় দাপিয়েছেন পাড়ার মাঠ। পরে ফুটবল-ক্রিকেট খেলেছেন জাতীয় পর্যায়ে। সুনাম কুড়িয়েছেন নিজ এলাকার জন্য। সাবেক এসব খেলোয়াড় এবার মাঠে নেমেছেন নতুন লক্ষ্যে। তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তৈরি করতে চান তাঁরা। সে জন্য গঠন করেছেন গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত ফুটবল একাডেমি। সেখানে বিনা মূল্যে ফুটবল প্রশিক্ষণ নিচ্ছে খুদে খেলোয়াড়েরা।

গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত ফুটবল একাডেমি বলছে, একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়া খুদে খেলোয়াড়েরাই একদিন দেশ-বিদেশে গেন্ডারিয়ার নাম ছড়িয়ে দেবে। ক্রমান্বয়ে নতুন প্রজন্ম খেলাধুলায় আগ্রহী হবে। মাদক বা সন্ত্রাসের পথে পা বাড়াবে না। তবে একাডেমির খুদে খেলোয়াড়েরা যে মাঠে (ধূপখোলার ইস্ট এন্ড ক্লাব মাঠ) প্রশিক্ষণ নেয়, তা খেলাধুলার প্রায় অনুপযোগী। প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে প্রায়ই আঘাত পায় তারা।

গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত খেলোয়াড় কল্যাণ সোসাইটির অধীনে পরিচালিত হয় গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত ফুটবল একাডেমি। ২০১৪ সালে একাডেমি চালু হয়। তখন থেকে বিনা বেতনে গেন্ডারিয়াসহ ওয়ারী, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ীর খুদে ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে তারা। একসময় একসঙ্গে প্রায় ২০০ জন খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তবে ক্রমান্বয়ে তা কমে এখন ৪০ জনে দাঁড়িয়েছে।

ফুটবল একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানায়, ধূপখোলা মাঠের অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের প্রশিক্ষণে ব্যাঘাত ঘটছে। যে কারণে প্রশিক্ষণার্থী কমে গেছে।

গত মঙ্গলবার বিকেলে দেখা যায়, ইস্ট এন্ড ক্লাব মাঠে ৩০ থেকে ৩৫ জন খুদে খেলোয়াড়কে ফুটবল প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত ফুটবল একাডেমির কোচ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, একাডেমির যাত্রা শুরুর পর থেকেই তিনি খুদে খেলোয়াড়দের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। তাঁদের এখানে প্রশিক্ষণ নেওয়া খেলোয়াড়েরা পাইওনিয়ার ফুটবল লিগ, তৃতীয় বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলছে। তাঁরা আশা করছেন, তাঁদের এখানে প্রশিক্ষণ নেওয়া অনেকেই জাতীয় পর্যায়ের ফুটবলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।

আরাফাত হোসেনের বাসা গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডে। স্থানীয় একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে সে। সে এই একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আরাফাত বলল, আট মাস আগে সে এই একাডেমিতে ভর্তি হয়েছে।

এই একাডেমিতে তিন বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে গেন্ডারিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মাসুদ শাওন। সে বলল, এই একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে বেতন দিতে হয় না। বরং খেলাধুলার সব ধরনের সরঞ্জাম একাডেমি থেকে বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। এতে খেলোয়াড়দের মধ্যে একধরনের উৎসাহ কাজ করে।

গেন্ডারিয়া সোনালী অতীত খেলোয়াড় কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান খান একসময় জাতীয় ফুটবল দলে খেলেছেন। তিনি বলেন, ক্রিকেট ও ফুটবলে গেন্ডারিয়ার খেলোয়াড়দের অনেক অবদান। গেন্ডারিয়ার সন্তান ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

আতাউর রহমান খান বলেন, এলাকার সাবেক খেলোয়াড়দের সহযোগিতায় এই একাডেমি গঠন করা হয়েছে। একাডেমি পরিচালনায় তাঁরা নিয়মিত অর্থ সহায়তা করছেন। খেলোয়াড়দের যখন যা দরকার, তা সরবরাহ করছেন। তিনি আরও বলেন, তৃণমূলে খেলোয়াড় তৈরিতে তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।