অবসরে সিআইডির প্রধান

শেখ হিমায়েত হোসেন মিয়া
শেখ হিমায়েত হোসেন মিয়া

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান শেখ হিমায়েত হোসেন মিয়াকে অবসরে পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা নেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। চাকরির শেষ সময়ে এসে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছিলেন এই কর্মকর্তা।

গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শেখ হিমায়েত হোসেন মিয়ার চাকরির বয়স ৫৯ বছর হওয়ায় তাঁকে সরকারি কর্মচারী (অবসর) আইন অনুযায়ী ৩ মে থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ৩০ এপ্রিল তাঁকে পুলিশ অধিদপ্তরে বদলি করা হয়। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত তিনি সিআইডি কার্যালয়ে অফিস করেছেন।

শেখ হিমায়েত ২০০৯ সালের ১০ জুন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সাময়িক সনদ পান। সনদে তাঁর ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার কাশিয়ানি গ্রাম।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তাঁর ভাতা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। আমরা হিমায়েত হোসেনের কাছে ভাতার টাকা ফেরত চাইব। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছি তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। তাঁর সনদ আমরা প্রত্যয়ন করিনি।’

হিমায়েত হোসেনের জন্মতারিখ ১৯৬০ সালের ৪ মে। বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে ১৯৮৪ সালের ১ জুলাইয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তিনি যোগদান করেন। জন্মতারিখ হিসাব করলে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর বয়স দাঁড়ায় ১১ বছর ৬ মাস ২৬ দিন। এ ছাড়া শিক্ষাসনদ, পূরণকৃত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদনপত্র, সরকারি কর্মকমিশনের গেজেটে তাঁর নাম শেখ হিমায়েত হোসেন মিয়া। আর মুক্তিযোদ্ধা সাময়িক সনদে তাঁর নামের শেষে মিয়া উল্লেখ নেই।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিপত্র (২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি) অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর বা তার আগে যেসব মুক্তিযোদ্ধার বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাস ছিল, তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। হিমায়েত হোসেন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল ১১ বছর ৬ মাস ২৬ দিন। চাকরির আবেদনপত্রে তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করেননি। সরকারি কর্ম কমিশনের গেজেট ও মুক্তিযোদ্ধা সাময়িক গেজেটে তাঁর নামে মিল নেই।