সব টাওয়ার বন্ধ করে দিলে কেমন হয়: মোস্তাফা জব্বার

মোস্তাফা জব্বার। ফাইল ছবি
মোস্তাফা জব্বার। ফাইল ছবি

দুর্গম এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন মুঠোফোন সেবা দিতে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের দুই কিলোমিটারের মধ্যে মুঠোফোনের টাওয়ার বসানোর কাজ চলছিল। তবে টাওয়ার থেকে নির্গত বিকিরণের কারণে লাউয়াছড়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সেখানে আশ্রয় নেওয়া প্রাণী প্রজাতির ক্ষতি হতে পারে, এ অভিযোগে বন বিভাগের হস্তক্ষেপে কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে বুধবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি পোস্ট দিয়েছেন। আর ওই পোস্ট নিয়ে নানা মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বুধবার রাত পৌনে আটটার দিকে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ওই পোস্টটি দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমি অন্তত একটি বিষয় বুঝতে পারি না যে ডিজিটাল যুগে বসে আমাদের ভাবনাটা এত পেছনে কেন? লাউয়াছড়ায় টেলিটকের টাওয়ার বানানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই টাওয়ারে গাছপালা ও বন্য প্রাণীর নাকি ক্ষতি হবে। আমি বুঝি না, টাওয়ার ছাড়া লাউয়াছড়ায় মানুষ কীভাবে নেটওয়ার্ক পাবে। ওখানে যদি টাওয়ার ক্ষতিকারক হয় তবে মানুষ যেখানে বাস করে সেখানে টাওয়ার কেন? সব টাওয়ার বন্ধ করে দিলে কেমন হয়!’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম বলেন, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে মোস্তাফা জব্বার মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে টাওয়ার বসানোর পক্ষে বলেছেন। তবে বন্য প্রাণী ও তাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত। সরকারের নীতিনির্ধারণী পদে থেকে এ রকম বক্তব্য দুঃখজনক। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন ও বন্য প্রাণী রক্ষায় নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে ওনার মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রীর এ রকম বক্তব্য কতটুকু যৌক্তিক, তা প্রশ্ন উঠতেই পারে।

লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক জলি পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মোবাইল টাওয়ার বসানোর বিপক্ষে নই। তবে লাউয়াছড়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাছে এ রকম টাওয়ার বসানো বন্য প্রাণীদের জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যদি এখানে জোর করে টাওয়ার বসানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমাদের সংগঠন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে যাবে।’

উল্লেখ্য, লাউয়াছড়ার বন ঘেঁষে ডলুছড়া এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটক টেলিকম কোম্পানির টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু করেছিল। তবে বন বিভাগের বাধায় বর্তমানে কাজটি বন্ধ রয়েছে।