রমনায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা, দুলাভাই রিমান্ডে

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তামীম হোসেন ফয়সাল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে রমনা থানা-পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম এস এম সালমান ইমাম। গ্রেপ্তার তামীম সম্পর্কে নিহত সালমানের দুলাভাই।

সালমানের হত্যা রহস্য খুঁজে বের করার জন্য তামীমকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আজ বৃহস্পতিবার আবেদন করে রমনা থানা-পুলিশ। তামীমকে তিন দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

সালমানের লাশ রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সালমানের বাবা ছিলেন আইনজীবী। গত মাসে তিনি মারা গেছেন। সালমানের মা-ও গুরুতর অসুস্থ।

রমনা থানা-পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলছে, সালমানের লাশ গুম করার জন্য গত ৭ মে রাত ৮টার দিকে আসামি তামীম লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে ডাকেন। মালিবাগের ওই বাসায় অ্যাম্বুলেন্সও আসে। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে সালমানের লাশ না নিয়েই অ্যাম্বুলেন্স চালক চলে যান।

পুলিশ বলছে, সালমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রমনা থানার এসআই দুলাল চন্দ্র কুন্ড। বাসায় সালমানের লাশ দেখতে পান। আসামি তামীমকে তিনি গ্রেপ্তার করেন।

দুলাল চন্দ্র কুণ্ড বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, যে বাসায় সালমান খুন হয়েছেন, সেটা তাঁর বাবার বাড়ি। ওই বাড়িতে তাঁর দুই বোন থাকেন। বড় বোন বিবাহিত নন। ছোট বোন তাঁর স্বামী তামীমকে নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন। তামীমই সালমানকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে জানতে পারেন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ বাদী হয়ে কেউ মামলা করতে রাজি না হওয়ায় তিনি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

সালমান হত্যা মামলার এজাহার বলছে, সালমানের চোখের ওপর জখম, কপালে আছে কাটা দাগ। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত মিশ্রিত লালা বের হয়ে ছিল, গলায় কালচে দাগ। দুই হাতের কনুইয়ের ওপরে-নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রচণ্ড আঘাতের ফলে সালমান মারা গেছেন।

সালমানদের ঢাকায় নিজেদের দুটি বাড়ি আছে। একটি মালিবাগে, অপরটি রামপুরায়। তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুজ্জামান শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, সালমানকে তাঁর দুলাভাই তামীম পিটিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু কেন সালমানকে হত্যা করল সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তামীমকে জিজ্ঞাসাবাদে আদালতের অনুমতি মিলেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করা হবে।

রমনা থানা-পুলিশ জানিয়েছে, নিহত সালমান বেকার ছিলেন। আর আসামি তামীম মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে তামীমদের নিজেদের বাড়ি আছে। তবে বেশির ভাগ সময় তিনি থাকতেন সালমানদের মালিবাগের বাসায়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. তানভীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সালমান মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। মানসিক চিকিৎসাও নিয়েছেন। তিনি বেশির ভাগ সময় তিনি বাসায় থাকতেন। নানা কারণে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত।
আর্থিক কোনো বিরোধের জের ধরে সালমানকে খুন করা হয়েছে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা তানভীর হোসেন।

তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুজ্জামান জানান, সালমানদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন, সালমানদের বাড়িতে সব সময় ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। মারামারিও হতো।