কলমাকান্দায় শিকলে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে ফাতেমা আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল শুক্রবার রাতে খারনৈ গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবধূর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম, সতিন নার্গিস আক্তার, শ্বশুর মনসুর আলী ও ননদ ফরিদা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কলমাকান্দার খারনৈ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী থাকার পরও প্রায় পাঁচ মাস আগে একই গ্রামের ফাতেমাকে বিয়ে করেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমাকে মেনে নিতে পারেননি জাহাঙ্গীরের প্রথম স্ত্রী ও স্ত্রীর পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে সব সময়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। মাস চারেক আগে এ বিষয়ে গ্রাম্য সালিস বসে। এতে ফাতেমার সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ফাতেমা তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। তবে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার জাহাঙ্গীর ফাতেমাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এর পরপরই ফাতেমার ওপর জাহাঙ্গীরের পরিবারের লোকজন নির্যাতন শুরু করেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ফাতেমাকে শোয়ার ঘরে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে গতকাল রাত ১১টার দিকে কলমাকান্দা থানা-পুলিশ গৃহবধূ ফাতেমাকে উদ্ধার করে। পরে তাঁকে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই সময় পুলিশ জাহাঙ্গীরসহ চারজনকে আটক করে।

কলমাকান্দা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন আজ শনিবার সকালে বলেন, ‘ওই গৃহবধূ শঙ্কামুক্ত আছেন। তবে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।’

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছেন কিনা, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।