পোল বসানো নিয়ে বিরোধ, আট বছর পর বিদ্যুৎ পৌঁছাল গ্রামটিতে

রাজশাহী
রাজশাহী

দীর্ঘ আট বছর অপেক্ষার পর বিদ্যুৎ পেলেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গুনিয়াডাঙ্গা সোনারপাড়া গ্রামের ৭১ জন বাসিন্দা। পোল বসানো নিয়ে বিরোধের কারণে এই আট বছর গ্রামটিতে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। অবশেষে বিরোধ মীমাংসার পর ওই গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। আজ সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও পল্লী বিদ্যুতের বাগমারা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে ঝিকড়া ইউনিয়নের গুনিয়াডাঙ্গা সোনারপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা সেখানে বিদ্যুতায়নের জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়। মধ্যঝিনা গ্রাম থেকে গুনিয়াডাঙ্গা সোনারপাড়া পর্যন্ত কয়েকটি পোল বসিয়ে গ্রামটিতে বিদ্যুতের সংযোগের প্রক্রিয়া শুরুর পরেই জটিলতা দেখা দেয়। মধ্যঝিনা গ্রামের ইকবাল হোসেন, কবির হোসেন ও ইউনুস আলী নামের তিন ব্যক্তি তাঁদের জমিতে পোল বসাতে বাধা দেন। জমির পরিমাণ কমে যাওয়া ও চাষাবাদে সমস্যা হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে জমিতে পোল বসাতে বাধা দেন তাঁরা। এ নিয়ে গ্রামটিতে বিদ্যুতায়নের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ আট বছর ধরে প্রক্রিয়াটি বন্ধ থাকে।

তবে স্থানীয় গুনিয়াডাঙ্গা গ্রামের লোকজনের অনুরোধে ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় ওই তিন ব্যক্তি নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। তাঁরা নিজেদের আপত্তিও প্রত্যাহার করে নেন। এরপর পোল বসিয়ে গ্রামটিতে বিদ্যুৎ–সংযোগের প্রক্রিয়া শেষ করে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।

সব প্রক্রিয়া শেষে আজ সোমবার দুপুরে গ্রামটিতে বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করা হয়। এ উপলক্ষে সেখানে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ ফৌজদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফতাব উদ্দিন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মানিক এবং নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১–এর বাগমারা আঞ্চলিক দপ্তরের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রবীন্দ্রনাথ বসাক। বিদ্যুতায়নের উদ্বোধনের পরই গ্রামটিতে আলো জ্বলে ওঠে।

গুনিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আফজাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামান্য পোল বসানোর বিরোধ নিয়ে বিদ্যুতের সংযোগ পেতে আট বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এত দিন পর প্রতিপক্ষের বোধগম্য উদয় হওয়াতে তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোয় গ্রামের ৭১টি পরিবারই খুশি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল মানিক বলেন, সামান্য বিষয় নিয়ে গ্রামটিতে বিদ্যুৎ পৌঁছতে আট বছর সময় লেগে গেল। এখন আর কোনো বিরোধ থাকল না। গ্রামের লোকজন খুব খুশি বলে জানান তিনি।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১–এর বাগমারা আঞ্চলিক দপ্তরের মহাব্যবস্থাপক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামটিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরে ভালো লাগছে। বর্তমান সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা তাঁরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করবেন।