কক্সবাজারে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৩

কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলায় গতকাল সোমবার রাতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন রোহিঙ্গা। তাঁরা মানবপাচারকারী। আরেকজন মাদক ব্যবসায়ী।

এই তিন ব্যক্তি হলেন আবদুস সালাম (৫২), আজিম উল্লাহ (২২) ও ছৈয়দুল মোস্তফা ভুলু (৩৫)। আবদুস সালাম উখিয়ার পালংখালীর জামতলীর ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা। এর আগে তিনি মালয়েশিয়া থাকতেন। আজিম উল্লাহ টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর ২৫ নম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা। আর ছৈয়দুলের বাড়ি কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকায়। পুলিশের দাবি, ছৈয়দুল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সাতটি মামলা আছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, গতকাল রাতে কয়েকজন রোহিঙ্গা নাগরিককে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে জড়ো করার খবর পায় পুলিশ। সেই সূত্র ধরে পুলিশের বিশেষ দল উপজেলার বাহারছড়ার শামলাপুর এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান মানবপাচারকারী দলের সদস্যরা। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে কয়েকজন পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে ১১ জন নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে ওই এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে পাওয়া যায়। উদ্ধার হওয়া নারীরা গুলিবিদ্ধ দুজনকে দালাল বলে শনাক্ত করেন। গুলিবিদ্ধ দুই দালালকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় রোহিঙ্গা শিবিরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি আরও বলেন, নিহত দুজন সম্পর্কে মামা-ভাগনে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির থেকে রোহিঙ্গাদের কৌশলে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে টাকাপয়সা আত্মসাৎ করছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় দুটি অস্ত্র (এলজি), ৫টি তাজা গুলি ও ১১ জন নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জাহিরুল হকসহ ৪ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, গভীর রাতে শহরের পাহাড়তলীর পাহাড়ি আস্তানা থেকে মাদক ব্যবসায়ী ছৈয়দুল মোস্তফাকে আটক করে পুলিশ। এরপর স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাঁকে নিয়ে পুলিশ অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার অভিযানে যায়। গতকাল রাত তিনটার দিকে পুলিশ তাঁকে নিয়ে বাইপাস সড়কের কাটাপাহাড় এলাকায় গেলে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একসময় সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পাশের জঙ্গলে আত্মগোপন করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সন্ত্রাসী ছৈয়দুলকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪০০টি ইয়াবা, একটি এলজি ও দুটি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ একই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।