কাগজে-কলমে শ্রমিক আছে, বাস্তবে নেই

কাগজে-কলমে কাজ শুরু। কিন্তু কোথাও শ্রমিকের দেখা নেই। এ অবস্থা জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির। সেখানে কাজ শুরু তো দূরে থাক, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের মাঠপর্যায়ের চূড়ান্ত প্রকল্পই তৈরি করতে পারেননি পিআইও। যদিও পিআইওর দাবি, কাজ চলছে। যেগুলোর কাজ চলমান, সেগুলোর প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। জেলা থেকেই সেগুলো পাস হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ কোটি ৮২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই টাকার বিপরীতে ৩ হাজার ৩৯৩ জন অতিদরিদ্র শ্রমিকের কাজ করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া নন-ওয়েজ কস্ট বাবদ ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৭ টাকা ও সরদার মজুরি ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই কর্মসূচির কাজ সারা জেলায় ৪ মে শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৪ মে থেকে মেলান্দহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নেও কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু পিআইও এখনো চূড়ান্ত প্রকল্পই তৈরি করতে পারেননি।

গত রোববার মাহমুদপুর, দুরমুঠ ও নাংলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে কোথাও অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের শ্রমিক খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ সময় বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের ওই কর্মসূচির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাঁরাও কাজ শুরুর বিষয়টি জানাতে পারেননি। তাঁরা বলেন, কাগজে-কলমে কাজ শুরু হলেও এখনো মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু হয়নি।

নাংলা ইউনিয়নের বাসিন্দা গোলাম রব্বানী বলেন, ‘কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে কয়েক দিন শ্রমিকদের মাটি কাটতে দেখেছিলাম। দ্বিতীয় পর্যায়ে বা এবার এখনো এই ইউনিয়নের কোথাও মাটি কাটতে কোনো শ্রমিককে দেখিনি। কোথাও কাজ শুরু হয়নি।’

>

অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান
কাজ শুরু তো দূরে থাক, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের মাঠপর্যায়ের চূড়ান্ত প্রকল্পই তৈরি করতে পারেননি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
ইউনিয়ন পর্যায়ে কোথায় কোথায় প্রকল্প রয়েছে, সেটাও পিআইও অফিসে গিয়ে জানা যায়নি।
পিআইওর দাবি, কাজ চলছে। যেগুলোর কাজ চলমান, সেগুলোর প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

মাহমুদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আবদুল হালিম বলেন, ‘আপনার কাছেই শুনলাম অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। কই কোথাও কোনো শ্রমিককে কাজ করতে দেখিনি।’

এ বিষয়ে নাংলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের তালিকা পিআইও অফিসে পাঠিয়েছি।’ কাজ শুরু বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কাজ শুরু হয়েছে। শ্রমিকেরা কাজ করতেছেন।’ সরেজমিনে আপনার ইউনিয়নে কোনো শ্রমিক পাওয়া যায়নি—জানালে তিনি বলেন, ‘এখনো কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের চূড়ান্ত তালিকাই জেলা থেকে পাস হয়নি। তাহলে আবার কাজ কিসের।’

পিআইও আবদুর রাজ্জাক বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রকল্পের তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কয়েক দিন ধরে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা কাজের তালিকা দিয়েছেন। সব নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা করে জেলায় পাঠানো হবে।