নিখোঁজের তিন মাস পর থানায় দিল র্যাব

সেনাবাহিনীর সাবেক করপোরাল মুকুল হোসেন তিন মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের। এত দিন খোঁজ করে তাঁর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

গত বৃহস্পতিবার বিমানবন্দর থানা থেকে মুকুলের সন্ধান পান পরিবারের সদস্যরা। থানা থেকে জানানো হয়, ইয়াবাসহ তাঁকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছেন র‌্যাবের সদস্যরা।

মুকুল হোসেনের ভাই মনিরুজ্জামান গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে তাঁরা নিরাশ হয়ে যান। এরপরই বিমানবন্দর থানা থেকে ফোন পান। পরে তাঁরা সেখানে যান। পুলিশি হেফাজতে মুকুল হোসেন তাঁদের বলেছেন, তাঁকে সাদাপোশাকে কে বা কারা তুলে নিয়ে তিন মাস আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। পরে তাঁকে ৭০০ ইয়াবা বড়ি দিয়ে বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব। তাঁকে কোথায় রাখা হয়েছিল, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি মুকুল।

মনিরুজ্জামান দাবি করেন, তাঁর ভাই মাদক ব্যবসায় জড়িত নন। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে দিকে কলাবাগানের দ্বিতীয় লেনের এক বন্ধুর বাড়িতে ৮-১০ জন অস্ত্রধারী হানা দেয়। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশের সদস্য বলে পরিচয় দেয়। পরে মাথায় সাদা কাপড় পেঁচিয়ে মুকুল হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় প্রথমে কলাবাগান থানা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নিতে রাজি না হলেও পরে তা গ্রহণ করে।

মুকুল হোসেন সপরিবারে আশুলিয়ায় থাকেন। তুলে নেওয়ার ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে মুকুল হোসেনের স্ত্রী জিয়াসমিন স্বামীকে উদ্ধারের আবেদন করেন। পরিবারের সদস্যরা মানবাধিকার কমিশন, পুলিশ সদর দপ্তর, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ও গোয়েন্দা বিভাগে যোগাযোগ করে মুকুলের কোনো হদিস পাননি। অবশেষে থানাহাজতে তাঁর দেখা মিলল।

বিমানবন্দর থানা–পুলিশ বলছে, তাদের কাছে ইয়াবাসহ মুকুলকে সোপর্দ করেন র‌্যাব–১–এর সদস্যরা। এর আগে তিনি কোথায় ছিলেন বা কী হয়েছিল—এসব বিষয়ে তারা কিছুই জানে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাব-১–এর পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে মুকুল হোসেন কোথায় ছিলেন, তা আমি জানি না। মাদকসহ মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আর কোনো সহযোগিতা করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করছি।’