বাঁধের ভাঙনে হুমকিতে মনু নদের চাতলা সেতু

>

ভাঙনের কবলে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চাতলা সেতুর উত্তর প্রান্ত। ছবি: প্রথম আলো
ভাঙনের কবলে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চাতলা সেতুর উত্তর প্রান্ত। ছবি: প্রথম আলো

গত বছরের বন্যার পর সেতুর উত্তর প্রান্তে বালুর বস্তা স্থাপন করা হয়। পানির স্রোতে বস্তার অধিকাংশই নদগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মনু নদের ওপর নির্মিত চাতলা সেতুর উত্তর প্রান্তের বাঁধ গত বছর জুন মাসের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁধের কিছুটা উন্নয়ন হলেও সেতু রক্ষায় এখনো কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে সেতুটি। এ বছর বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করলে সেতুর উত্তর দিক ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সীমান্তবর্তী শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর চেকপোস্ট-শমশেরনগর-মৌলভীবাজার সড়কের মনু নদের ওপর এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬০ মিটার। ২০০৫ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সেতুটি নির্মাণ করেছিল। এ সড়ক ও সেতু ব্যবহার করে ভারতের ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি–রপ্তানি চালু রয়েছে। চাতলাপুর অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) কেন্দ্রের মাধ্যমে দুই দেশের যাত্রীরাও যাতায়াত করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, গত বছরের বন্যায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সওজের পক্ষ থেকে সেতুর উত্তর প্রান্তের পিলার এলাকায় সিমেন্ট মিশ্রিত বালুর বস্তা স্থাপন করে। বর্ষায় পানির স্রোতে এসব বস্তার অধিকাংশই নদগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

শরীফপুর ইউনয়িনের চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, মনু নদ শরীফপুর ইউনিয়নকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। সেতুর দক্ষিণ দিকে ছয়টি ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মানুষের বসতবাড়ি। আর সেতুর উত্তর দিকে তিনটি ওয়ার্ডে প্রায় ১৪ হাজার মানুষের বসতবাড়ি। এ পথে ভারতের উত্তর ত্রিপুরা ও আসামের একটি অংশের সঙ্গে রয়েছে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম।

২০০৫ সালে সেতুটি নির্মাণের আগে নৌকায় করে স্থানীয় মানুষজন ও ভারত–বাংলাদেশের যাত্রীরা পারাপার হতেন। অনেক কষ্টে চলত আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম। সেতু নির্মাণের পর মানুষজনের চলাচলে গতি বৃদ্ধির সঙ্গে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রমেও গতি বেড়েছে।

চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের আমদানি–রপ্তানিকারক সাইফুর রহমান ও তাসদিক হোসেন বলেন, গত বছর মনু সেতুর উত্তরাংশে একটি কালভার্ট ও সেতু দক্ষিণাংশ থেকে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন পর্যন্ত ১৬টি স্থানে রাস্তা ভেঙে দীর্ঘ আট মাস আমদানি–রপ্তানি বন্ধ ছিল। মনু সেতুটি এখনো পুরোপুরি হুমকির মুখে রয়েছে।

পাউবো মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে শুরু করলে নদের অবস্থা বেগতিক হয়ে যায়। মনু সেতুর উত্তর দিক রক্ষায় প্রতিরক্ষা বাঁধের সেতু থেকে উজানে ৩০০ মিটার এলাকায় বালু ও সিমেন্ট মিশ্রিত ২৯ হাজার জিআই বস্তা স্থাপনের কাজ করা হবে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল আলম বলেন, সওজের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ড মনু নদের উত্তর দিকের প্রতিরক্ষা বাঁধের উজানে ৩০০ মিটার এলাকায় উন্নয়ন কাজ করবে। নদের দক্ষিণ দিকে জেগে উঠা বালুর চরটিও কেটে পানির গতিপথ কিছুটা পরিবর্তিত হবে।