রংপুরে বেনারসিপল্লির তাঁতিদের মুখে হাসি

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় জমে উঠেছে ঈদের বাজার। গত মঙ্গলবার হাবু এলাকার বেনারসিপল্লিতে। ছবি:
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় জমে উঠেছে ঈদের বাজার। গত মঙ্গলবার হাবু এলাকার বেনারসিপল্লিতে। ছবি:

রংপুরে বেনারসিপল্লিতে তৈরি রাঙুলি, চুন্দরি, নেট, ঝুট, কোটাসহ নানা শাড়ির নাম ঘুরেফিরে আসছে নারীদের মুখে। ইতিমধ্যে ঈদের বাজারও জমে উঠেছে। নানা রঙের শাড়ির কদরও বাড়ছে বেনারসিপল্লিতে। তাঁতিদের এখন ব্যস্ত সময় কাটছে। ক্রেতাদের আগমনে তাঁতিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার হাবু বেনারসিপল্লিতে গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, নারীরা ঈদের কেনাকাটা করতে ছুটে এসেছেন। তাঁদের কেউ এসেছেন ব্যক্তিগত গাড়িতে। কেউবা চার্জার–রিকশায়। তবে অধিকাংশ নারী দল বেঁধে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় এখানে আসেন বলে জানা যায়।

তাঁতিরা জানান, ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বেনারসি শাড়ি ও থ্রিপিসের চাহিদা গত বছর ঈদে অনেক বেশি হওয়ায় এবার তাঁতিরা অনেক আগেই এসব শাড়ি তৈরি করে শোরুমে সাজিয়ে রেখেছেন।

রংপুরের হাবু তাঁতিপাড়ার বেনারসিপল্লিতে ৭২টি তাঁত কারখানায় বেনারসিপল্লির তাঁতিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। শাড়ি-থ্রিপিস সরাসরি কারখানা থেকে বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে এ এলাকায় গড়ে ওঠা কয়েকটি দোকানেও চলছে কেনাবেচা।

তাঁতিরা জানান, রাঙুলি, চুন্দরি, নেট, ঝুট, কোটা শাড়ির কদর বেশি। এসব শাড়ির দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। এক হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে এসব শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বেনারসি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকায়। সেই সঙ্গে চাহিদা রয়েছে জামদানি শাড়িরও। এক হাজার থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে জামদানি শাড়ি। তাঁতের তৈরি সুতি শাড়ি ও সিল্ক শাড়ির চাহিদাও অনেক। তাঁতিরা আরও জানান, সারা বছর খুচরা ও পাইকারি বিক্রি থাকলেও ঈদে বিক্রি বেড়ে যায়। রংপুর শহর ছাড়াও আশপাশের জেলা শহর থেকে লোকজন বেনারসি পল্লিতে ছুটে আসেন শাড়ি-থ্রিপিস কিনতে।

গত মঙ্গলবার বেনারসিপল্লিতে শাড়ি কিনতে আসা রংপুর শহরের গুপ্তপাড়ার সুমাইয়া আক্তার জানালেন, বাজারের থেকে এখানে শাড়ির দাম কিছুটা কম। বেনারসি শাড়ির বুনন ভালো। রং, নকশাও পছন্দের।

শহর থেকে কয়েকজন নারী দল বেঁধে এসেছেন বেনারসিপল্লিতে। এঁদের মধ্যে সামসুন্নাহার নামের একজন বলেন, ‘গত বছরও এখান থেকে শাড়ি কিনেছি। শাড়ি দেখছি। দামও নাগালের মধ্যে রয়েছে।’

‘মৌমিতা বেনারসি’ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী নাজমুন নাহার বলেন, ‘ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নকশার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শাড়ি তৈরি করা হয়। ঈদের কেনাকাটা করতে নারীরা ছুটে আসতে শুরু করেছেন। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’

বেনারসিপল্লির ‘ফাইয়াজ বেনারসি’র মালিক ফরিদা রহমান বলেন, এবার রোজার শুরু থেকেই কেনাবেচা শুরু হয়েছে। টুকটাক বিক্রি হচ্ছে।

‘নিশাত বেনারসি’ প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুল কুদ্দুস বলেন, রংপুর শহর ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে মানুষজন গাড়িতে করে এসে শাড়ি কিনছেন।