সাহায্য তো পেলই না, উল্টো ভাঙল ৩৫ হাজার ডিম

নাটোরের বনপাড়ায় আগ্রাণ সুতিরপাড় এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে পড়ে থাকা ডিম। ছবি: প্রথম আলো
নাটোরের বনপাড়ায় আগ্রাণ সুতিরপাড় এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে পড়ে থাকা ডিম। ছবি: প্রথম আলো

কুড়ি হাজার টাকা বকশিশ না দেওয়ায় ৩৫ হাজার ডিম (মুরগির ডিম) নষ্ট করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে নাটোরের বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রাণ সুতিরপাড় এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি জানান, আজ ভোর ৩টার দিকে ডিম ভর্তি একটি পিকআপ (ঢাকা মেট্রো ন ১৭-৩৭৮০) আগ্রাণ সুতিরপাড় এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের পথচারী (ফিডার সড়ক) সড়কে নেমে পড়ে। ভোর পাঁচটার দিকে বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে আসে। তখন পিকআপের চালক ও সহকারী পিকআপটি মহাসড়কে তোলার ব্যাপারে তাঁদের কাছে সহযোগিতা চান। এ সময় পুলিশ তাঁদের কাছে রেকারভাড়া বাবদ ২০ হাজার টাকা বকশিশ দাবি করে। এত টাকা দিতে পারবো না বলে জানালে পুলিশ ডিমের খাঁচা আটকানো দড়ি কেটে দিতে থাকে। এ সময় ডিমের খাঁচাগুলো সড়কে পড়ে গিয়ে প্রায় সব ডিম ভেঙে যায়।

পিক-আপের চালক সিরাজগঞ্জ সদরের মজনু মিয়া বলেন, আমার গাড়ির চাকা ফেটে ফিডার রাস্তায় নেমে গেলেও তখন পর্যন্ত কোনো ডিম পড়েনি বা ভাঙেনি। কিন্তু পুলিশের চাহিদামত ২০ হাজার টাকা না দেওয়াতে তারা আমার ওপর রেগে গিয়ে ডিম বাঁধার রশি কেটে দেয়। এতে সব ডিম পড়ে ভেঙে যায়। চালক জানান, ডিমের মালিক সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল গ্রামের মেসার্স প্রীতিমণি এন্টারপ্রাইজ।

ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক বিপ্লব কুমার সাহা। তিনি জানান, ওই পিকআপে তাঁর প্রতিষ্ঠানের ৩৫ হাজার ১০০ টি মুরগীর ডিম ছিল। এ ঘটনায় তাঁর পৌনে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিপ্লব সাহা বলেন, আমি চালকের মোবাইল দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি এবং রশি না কাটার জন্য হাতে পায়ে ধরার কথা বলে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমার কোনো কথা শোনেননি।

আজ সকাল ১১টায় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় নারীরা রাস্তায় পড়ে থাকা ভাঙাচোরা ডিম কুড়িয়ে নিচ্ছেন। রাস্তা জুড়ে ভাঙা ডিমের হলুদ কুসুম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। পিকআপের চালক ও তাঁর সহকারী ভাঙা ডিম ফেলে দিয়ে প্লাস্টিকের খাঁচাগুলো সংগ্রহ করছেন। কেটে ফেলা রশিগুলো রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে আছে।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলিম হোসেন শিকদার আজ সন্ধ্যায় মুঠোফোনে এই প্রতিনিধিকে জানান, রশি কেটে দিয়ে ডিম নষ্ট করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। পিকআপটি কাত হয়ে ডিম এমনিতেই পড়ে গেছে। ঘটনার সময় হাইওয়ে পুলিশের কারা দায়িত্বে ছিলেন তা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন রেখে দেন।