ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে 'শিশু কর্নার'

‘শিশু কর্নার’ পার্কে আনন্দে মেতেছে শিশুরা। সম্প্রতি তোলা ছবি।  প্রথম আলো
‘শিশু কর্নার’ পার্কে আনন্দে মেতেছে শিশুরা। সম্প্রতি তোলা ছবি। প্রথম আলো

বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ। দেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক এই মসজিদে প্রতিদিন ঘুরতে আসেন দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক। তাঁদের সুবিধার্থে ও শিশুদের কাছে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে এবার ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে চালু করা হয়েছে শিশু কর্নার।

শিশুদের প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক স্থাপনার প্রতি আগ্রহী করতে এবং পরিবারের সঙ্গে আসা শিশুদের বিনোদনের জন্য এমন আয়োজন করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো ১৯৮৫ সালে ঐতিহাসিক মসজিদের শহর হিসেবে ষাটগম্বুজ মসজিদসহ খানজাহানের স্থাপত্যগুলোকে তালিকাভুক্ত করে। বর্তমানে সংরক্ষিত এসব পুরাকীর্তির মধ্যে ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে বেশ কিছু উন্নয়নকাজ করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। শিশুদের জন্য কর্নার ছাড়াও ঐতিহাসিক ঘোড়াদিঘির পাড়ে পায়ে চলা পথ নির্মাণ, বসার জন্য বিশ্রামাগার, ফুট লাইট, বাগেরহাট জাদুঘর সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মসজিদের দক্ষিণ পাশে বাগেরহাট জাদুঘরের বিপরীতে করা শিশু কর্নারে ছোট পরিসরে শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব রাইডে চড়ে শিশুরা আনন্দের সঙ্গে জানতে পারে বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিশু কর্নারে দোলনা, স্লিপার আর ডেকি-কল রাইডে চড়ছে শিশুরা। সেখানে তাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।

ফরিদপুর থেকে ঘুরতে আসা কলেজশিক্ষক মো. মনিরুল হোসাইন বলেন, ‘ঘোরাঘুরি আগ্রহটা ছোটবেলা থেকেই। দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানে ঘুরেছি। তবে এখানে এসে আমার কাছে শিশু কর্নারের ধারণাটা খুবই ভালো লেগেছে। শিশুদের জন্য এমনটা করা খুবই ভালো উদ্যোগ। এতে শিশুরা আরও বেশি আকৃষ্ট হবে এ ধরনের ঐতিহাসিক-দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণে। দেশের সব পর্যটন স্পটে এমন শিশু কর্নার করা সম্ভব হলে পর্যটনকেন্দ্রগুলো শিশু-কিশোরদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হবে।’ বাগেরহাট শহর থেকে ঘুরতে আসা মুনিয়া জামান বলেন, ‘আমাদের শহরে ভালো পার্ক বা ঘোরার মতো স্থান অনেক কম। বাচ্চাকে নিয়ে তাই এখানে এসেছি। এখানকার পরিবেশও খুব সুন্দর। কিছু রাইড থাকায় ওরাও খুব পছন্দ করে।’

বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, ‘প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর শিশুদের কাছে অনেকটাই নীরস। এসব স্থানে আনন্দ-বিনোদনের সুযোগ কম থাকায় অনেক সময় তাদের উৎসাহ ও আগ্রহ কম থাকে। শিশুরা যাতে ষাটগম্বুজ মসজিদ ও জাদুঘরে ঘুরতে এসে বিরক্তবোধ না করে এবং তারা যাতে আনন্দের সঙ্গে শিখতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমাদের শিশু কর্নারের এই ছোট্ট উদ্যোগ। প্রাথমিকভাবে আমরা এখানে কিছু খেলনা ও রাইডের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আরও কিছু রাইডের ব্যবস্থা করে শিশু কর্নারকে সমৃদ্ধ করা।’