উচ্ছেদের পর আবার দখল

ফুটপাতের দুই পাশেই দোকান। গতকাল বিকেলে ফার্মগেটে।  ছবি: প্রথম আলো
ফুটপাতের দুই পাশেই দোকান। গতকাল বিকেলে ফার্মগেটে। ছবি: প্রথম আলো

ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডের সেজান পয়েন্টের সামনে থেকে লেগুনাস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কের প্রায় ৩০০ মিটার ফুটপাত গত বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে দখলমুক্ত করেছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে গতকাল মঙ্গলবার ওই অংশে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে আগের মতোই ভ্রাম্যমাণ দোকানিদের ব্যবসা করতে দেখা গেছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, বৃহস্পতিবারের উচ্ছেদের সময় ব্যবসায়ীদের মাচা, চৌকিসহ বিভিন্ন জিনিস গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা তখন মালামাল নিয়ে সরে যান। ডিএনসিসির কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার খানিক পরই ব্যবসায়ীরা আবার দোকান বসাতে শুরু করেন। যাঁদের মাচা ও চৌকি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাঁরা ফুটপাতের ওপর মালামাল সাজিয়ে বসেন।

গতকাল সড়কের ওই অংশে দেখা গেল পুরোনো চিত্র। আগের মতোই বাজারে পরিণত হয়েছে জায়গাটি। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে চার সারিতে বসানো হয়েছে নানান রকম পণ্যের দোকান। মাচা, চৌকি, বাঁশ দিয়ে পণ্য ঝোলানোর ব্যবস্থা, ত্রিপলের ছাউনির, বড় ছাতা, বৈদ্যুতিক বাতি, বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটরের ব্যবস্থা—সবই আগের মতো। দেখে বোঝার উপায় নেই, এখানে কয়েক দিন আগে অভিযান চালানো হয়েছে। ফুটপাতের দুপাশে দোকান আর ওপরে ত্রিপলের ছাউনির কারণে ফুটপাতকে মনে হয় মার্কেট কিংবা বিপণিবিতানের গলিপথ।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ইন্দিরা রোডের কড়ইতলা লেগুনাস্ট্যান্ড থেকে সোনালী ব্যাংকের শাখা পর্যন্ত সড়কের দিকে মুখ করে ৬০টির বেশি সবজি, মুদি ও ফলমূলের দোকান। এই অংশে মূল সড়কের দিকে মুখ করে বসানো হয়েছে হাঁস-মুরগি, চা-সিগারেটের প্রায় ৪০টি দোকান। সোনালী ব্যাংক অংশের পর থেকে তেঁজগাও কলেজের ক্যানটিন পর্যন্ত আরও ৮০টির মতো দোকান। এগুলোর বেশির ভাগই মেয়েদের কাপড়চোপড় আর অলংকারের। বিভিন্ন ধরনের মসলার দোকানও আছে ওই অংশে। তেজগাঁও কলেজ ক্যানটিনের পর থেকে মাহবুব প্লাজার সামনে পর্যন্ত দখলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এই অংশে সড়কে দুই সারি, ফুটপাতে দুই সারি এবং মূল সড়কের এক পাশ দখল করে আরেক সারি দোকান বসানো হয়েছে। অথচ মাহবুব প্লাজায় ডিএনসিসির ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়।

উচ্ছেদের পরেই আবার দখল হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৫) মীর নাহিদ আহসান বলেন, ঢাকা শহরকে হকারমুক্ত করার জন্য এবং ফুটপাত জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করতে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবেই ওই জায়গার অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হয়েছিল। বিষয়টি স্থানীয় থানার পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে জানানো হয়। ওই জায়গা থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে ভবিষ্যতে সেখানে আবার অভিযান চালানো হবে।

২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান বলেন, সামনে ঈদ। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় হকারদের আবার বসতে দেওয়া হয়েছে। ঈদের পরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা হবে।