তরুণদের ভিড় রেস্তোরাঁয়

রাজশাহী শহরে ইফতারের সময় ভিড় জমছে রেস্তোরাঁয়।  ছবি: প্রথম আলো
রাজশাহী শহরে ইফতারের সময় ভিড় জমছে রেস্তোরাঁয়। ছবি: প্রথম আলো

‘ইফতারির বুকিং দিতে গিয়ে তিনটি রেস্তোরাঁয় কোনো আসন খালি পাওয়া গেল না। চার নম্বর রেস্তোরাঁয় গিয়ে আসন মিলল।’ ইফতারের এই অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রবিউল আলম।

চায়নিজ এবং ফার্স্টফুডের রেস্তোরাঁর ‘ইফতার প্যাকেজ’ গত কয়েক বছরে রাজশাহীতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগে থেকে ‘প্যাকেজ’ এবং ‘টেবিল’ বুকিং না দিয়ে গেলে বসার জায়গা পাওয়া দায়। এই রেস্তোরাঁগুলো রাজশাহীর ইফতারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বেশির ভাগ খদ্দের উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা। তবে বাড়িতে ইফতারির আয়োজন না করে সপরিবার অনেকেই যাচ্ছেন এসব রেস্তোরাঁয়। কয়েক বছরে রাজশাহীতে এ ধরনের রেস্তোরাঁ ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।

ফেসবুকে ‘রাজশাহী ফুডিজ গ্রুপ’ নামে একটি গ্রুপ চালু রয়েছে। রমজানের এক দিন আগে থেকে এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো ছবিসহ তাদের ইফতারের প্যাকেজ ছাড়ে। এসব রেস্তোরাঁয় ইফতারিতে ঠাঁই পাচ্ছে হালিম, তেহারি, ফিরনি, ফ্রায়েড রাইস, চিকেন শরমা, গ্রিল বাকেট বিরিয়ানি, শাহি জিলাপি, রেশমি জিলাপি, পিঁয়াজি, বেগুনি, চপ, চিড়া, পোলাও, শাহি জর্দা, বাদাম ফিরনি, স্পেশাল লাবাং, পুডিং (ক্যারামেল/ব্রোকেন গ্লাস), মিনি ক্রিসপি চিকেন, চিকেন কাটলেট, চিকেন বল, বোরহানি প্রভৃতি।

ইফতারের সময় নগরের সাহেব বাজার এলাকার ‘অডার্স আপ’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় বসে রবিউল আলম বলছিলেন, ‘রেস্তোরাঁগুলোর মনোরম পরিবেশ, একসঙ্গে পরিবারের সবাইকে নিয়ে অথবা বন্ধুরা সবাই মিলে মুখোমুখি বসার ব্যবস্থা থাকে। এদের পরিবেশনাও খুব ভালো।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তূর্য রাজশাহী ফুডিজ গ্রুপের ‘মেল্টিং মোমেন্টস’ নামের একটি রেস্তোরাঁর খাবার সম্পর্কে বলেন, ‘ছুটিতে বন্ধুরা মিলে ইফতার করতে গিয়েছিলাম। এতগুলো আইটেম খেয়ে শেষ করতে পারিনি। লাচ্ছিটা বেশ ছিল।’

রাজশাহী নগরের ব্যবসায়ী আরাফাত রুবেল নগরের কাজলা এলাকায় ‘রুট সিক্স’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় গত বৃহস্পতিবার ইফতার করেছেন। তাঁর মতে, রাজশাহীর মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা ও রুচিবোধের পরিবর্তন, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এসব রেস্তোরাঁ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

নগরের কুমারপাড়া এলাকার নতুন রেস্তোরাঁ ‘আমানা ফান ভিলে’–এর ব্যবস্থাপক সিনহান আকাশ বলেন, ‘ভালো পরিবেশ, খাবারের মান, আন্তরিকতা এবং ক্রেতার পকেট মানির কথা বিবেচনা করে দ্রুত নতুন প্যাকেজ তৈরি করে দিয়ে থাকি। এ জন্যই মানুষ আসছে।’