সিলেটে অবৈধ সংযোগের কারণে পানির সংকটে বৈধ গ্রাহকেরা

সিলেটে বৈধ গ্রাহকদের প্রতিদিনের পানির চাহিদা সাড়ে চার কোটি লিটার। এর বিপরীতে সিটি করপোরেশন পানি সরবরাহ করছে পাঁচ কোটি লিটার। কিন্তু এরপরও শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট লেগেই আছে। ভুক্তভোগী বাসিন্দারা সমাধানের জন্য আবেদন জানালেও সংকটের সমাধান হচ্ছে না।

সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখা জানিয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করা হলেও অবৈধ সংযোগের কারণে পানিসংকটে পড়ছেন বৈধ গ্রাহকেরা। সিলেট শহরে পানির প্রায় ১৬ হাজার বৈধ গ্রাহক আছেন। কিন্তু এর বাইরেও প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার বাড়ির মালিক অবৈধভাবে সংযোগ বসিয়ে সিটি করপোরেশনের পাইপ থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। এ কারণে বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। ঈদের পরপরই এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান চালানো হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

আজ বুধবার দুপুরে সিলেট শহরের লন্ডনি রোড এলাকা ঘুরে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পানির সংকটে ভুগছেন এই এলাকার বাসিন্দারা। এর বাইরে শহরের বাগবাড়ি এতিম স্কুল রোড, করেরপাড়া, হাওলাদারপাড়া, রায়নগর, বারুতখানা, মাছিমপুরসহ অন্তত ২০ থেকে ২৫টি এলাকায় পানির সংকট তীব্র। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশনের লাইনে দিনে মাত্র এক থেকে দেড় ঘণ্টা পানি পাওয়া যায়। লাইনে পানির চাপও অনেক কম। রমজান মাস ও তীব্র গরম মিলিয়ে পানির সংকটে শহরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে শহরের উঁচু এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের সবচেয়ে বেশি পানির সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে।

লন্ডনি রোড এলাকায় পানির সমস্যা থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন পানি সরবরাহ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর। তিনি বলেন, ওই এলাকায় একটি উৎপাদক নলকূপ বসানোর জন্য এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। জায়গা নিয়ে একটু ঝামেলা থাকার কারণে এ নলকূপ বসানোর কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখা জানিয়েছে, সিলেট শহরে বসবাসরত ভাসমান ও স্থায়ী বাসিন্দাদের মোট পানির চাহিদা আট কোটি লিটার। এর বিপরীতে সিটি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করছে ৫ কোটি লিটার। বাকিরা পানির চাহিদা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মেটাচ্ছে। তবে সিটি করপোরেশন যে পরিমাণ পানি সরবরাহ করে থাকে, এতে বৈধ ১৬ হাজার গ্রাহকের সংকটে পড়ার কথা নয়। কিন্তু নগরে অন্তত পাঁচ হাজার অবৈধ পানির সংযোগ থাকার কারণে পানির সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, নির্দিষ্ট কয়েকটি উঁচু এলাকা ছাড়া নগরে পানির সংকট সে অর্থে নেই বললেই চলে। আর যেসব অবৈধ সংযোগ রয়েছে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন করতে নিয়মিতই সিটি কর্তৃপক্ষ অভিযান পরিচালনা করে থাকে। ঈদের পরপরই পুনরায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান চালানো হবে।