নুসরাতের শ্লীলতাহানির মামলায় অধ্যক্ষের রিমান্ড

অধ্যক্ষ সিরাজ উদ–দৌলা।
অধ্যক্ষ সিরাজ উদ–দৌলা।

পুড়িয়ে হত্যা করা ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির শ্লীলতাহানির ঘটনায় তাঁর মায়ের করা মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ–দৌলার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন।

এর আগে নুসরাতের শ্লীলতাহানির ঘটনায় সোনাগাজী দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ–দৌলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানান।

আদালত সূত্র জানায়, আজ সকালে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজকে রিমান্ড শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আদালত সূত্র জানায়, গত ২৭ মার্চ সকালে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ ওই মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় নুসরাতের মা সোনাগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত পরীক্ষা দিতে গেলে তাঁকে ডেকে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত মারা যান। এ ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত পিবিআই ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। নুসরাত হত্যা মামলায় আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তাঁর হাত আছে বলে স্বীকার করেন।

নুসরাতের মায়ের দায়ের করা শ্লীলতাহানির মামলা ও নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা হত্যার ঘটনায় করা মামলা দুটি ফেনীর পিবিআই তদন্ত করছে।