আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে দুই বছর

টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে দুই বছর ধরে। অথচ তিন মাসের মধ্যে আহ্বায়ক কমিটির সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা ছিল। কিন্তু জেলা সম্মেলন তো দূরের কথা, ১২টি উপজেলার মধ্যে সম্মেলন করতে পেরেছে মাত্র ১টিতে।

সংগঠনের নেতারা জানান, ২০১৭ সালের ২০ মে মোস্তাফিজুর রহমানকে আহ্বায়ক করে জেলা ছাত্রলীগের ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ কমিটিতে পাঁচজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। তাঁরা হলেন তানভীরুল ইসলাম, রনি আহমেদ, শফিউল আলম, রাশেদুল হাসান ও শামীম আল মামুন। এ কমিটি দায়িত্ব পাওয়ার পর শুধু মধুপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করতে পেরেছে। মির্জাপুর, ভূঞাপুর, গোপালপুর, সখীপুর ও বাসাইলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করে। এর মধ্যে মির্জাপুর ও সখীপুরে জেলা কমিটির দেওয়া কমিটি বাতিল করে দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ জেলা ছাত্রলীগকে বাদ রেখে সরাসরি কেন্দ্র থেকে উপজেলা দুটিতে কমিটি দিয়েছে।

দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় বিভিন্ন উপজেলায় সংগঠনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতারই বয়স নেই। ছাত্রত্ব চলে গেছে অনেকের। অনেকে আবার কর্মজীবনে ঢুকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তারপরও সেই কমিটি দিয়েই চলছে কার্যক্রম।

জেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, সংগঠনের জেলা শাখার আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কেরা তাঁদের পদপদবির পরিচয় দিতে পারলেও বেশির ভাগ নেতা-কর্মীর দলীয় পদবি নেই। তাই অনেকেই হতাশ। দীর্ঘদিন রাজনীতি করেও পদপদবির পরিচয় দিতে পারছেন না তাঁরা।
জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীরুল ইসলাম বলেন, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকা একাধিক নেতা জানান, ছাত্রনেতারা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিলেও তাঁদের ওপর কর্তৃত্ব রয়েছে মূল দল আওয়ামী লীগের। তাই অনেক উপজেলায় সম্মেলন বা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলেও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা বা সাংসদের হস্তক্ষেপের কারণে তা করতে পারেননি ছাত্রলীগ নেতারা। অনেক উপজেলাতেই স্থানীয় সাংসদ বা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কোনো নেতার ইচ্ছা অনুযায়ী কমিটি দিতে হয়েছে। আর জেলা সম্মেলনও আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশনা না থাকায় আয়োজন করা যাচ্ছে না।

জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমেই সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। ঈদের পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সম্মেলনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।