হাসপাতালে থাকা নবজাতকটির অভিভাবক কে?

নয় দিন ধরে ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের ইনকিউবেটরে চিকিৎসাধীন এই নবজাতক। ফরিদপুর, ২৪ মে। ছবি: প্রবীর কান্তি বালা
নয় দিন ধরে ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের ইনকিউবেটরে চিকিৎসাধীন এই নবজাতক। ফরিদপুর, ২৪ মে। ছবি: প্রবীর কান্তি বালা

ফরিদপুর শহরের নিলটুলী এলাকায় অবস্থিত ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতাল। এই হাসপাতালের একটি ইনকিউবেটরে ১৫ মে থেকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এক নবজাতককে। কিন্তু তার অভিভাবক পরিচয়ে দেওয়া ব্যক্তি লাপাত্তা হওয়ায় বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৫ মে সন্ধ্যায় সুজয় পরিচয়ে এক ব্যক্তি সংকটাপন্ন অবস্থায় ওই নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করান। সুজয় নিজের ঠিকানা গোপালগঞ্জ বলে হাসপাতালের নথিতে উল্লেখ করেন। তাঁর সঙ্গে মধ্যবয়সী একজন নারীও ছিলেন। কিন্তু তাঁর কোনো নাম বা পরিচয় নথিতে লেখা হয়নি। ‘সুজয়’ নিজের নামের সঙ্গে একটি মুঠোফোন নম্বর দিয়েছেন।

হাসপাতালের কয়েকজন নার্স জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় ‘সুজয়’ ও আনুমানিক ৪৮ বছর বয়সী এক নারী নবজাতকটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ‘সুজয়’ শিশুটির বাবা পরিচয় দিয়ে বলেছিলেন, ওই দিন সকালেই মেয়েটি জন্ম নিয়েছিল। কিন্তু খুব অসুস্থ হওয়ায় তার মাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এরপর ১৮ মে সকালে ‘সুজয়’ ও ওই নারী হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে অভিভাবক ছাড়াই নবজাতকটির চিকিৎসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে চলছে।

হাসপাতালের শিশু কনসালট্যান্ট মো. শফিউল্লাহ শিশুটির চিকিৎসা দিচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, নবজাতকটি কম ওজন (দুই কেজি), খিঁচুনি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জন্ম নিয়েছে। এ জন্য প্রথম থেকেই তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়েছে।

হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক তানভীর আহমেদ আজ শুক্রবার দুপুরে বলেন, নবজাতকের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তবে তার অভিভাবকদের সন্ধান না পাওয়ায় নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।

হাসপাতালের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহ্উদ্দিন বলেন, হাসপাতালের নথিতে নবজাতকের বাবা পরিচয়দানকারী ব্যক্তি যে মুঠোফোন নম্বর দিয়েছিলেন, সে নম্বরে এক দফা কথা হয়েছে। কিন্তু তিনি মেয়ের ব্যাপারে তেমন কোনো আগ্রহ দেখাননি। এরপর গত চার দিন ধরে ওই নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।

মো. সালাহ্উদ্দিন আরও বলেন, অন্য মায়েদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে নবজাতককে পান করানো হচ্ছে। ওষুধসহ যাবতীয় সামগ্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করছে। তিনি জানান, অভিভাবকেদের খোঁজ পাওয়া না গেলে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে জানিয়ে এ ব্যাপারে তারা পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন।