বেলা গড়ালে নীরব ক্যাম্পাসে ইফতারের প্রাণচাঞ্চল্য

ক্যাম্পাসে দল বেঁধে ইফতারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।  ছবি: প্রথম আলো
ক্যাম্পাসে দল বেঁধে ইফতারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রথম আলো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি বিকেল থাকে প্রায় শিক্ষার্থীশূন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বেলা সাড়ে তিনটায় ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে গেলে হাতে গোনা কয়েকজনকে ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে রমজান মাসের শুরু থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকেলগুলো রূপ নেয় অন্য রকম। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ইফতারি সংগ্রহ করে ক্যাম্পাসে বসে ইফতারের আনন্দঘন আয়োজন।

রমজান মাসে প্রতিদিন ক্যাম্পাসে বিকেলে শিক্ষার্থীদের ইফতারের আয়োজন শুরু হয়। ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার, কাঁঠালতলা, ভাষাসৈনিক রফিক ভবন, অবকাশ ভবন, বিভিন্ন অনুষদের নিচে বসে শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। বিভিন্ন বিভাগ, ব্যাচের শিক্ষার্থীদের থাকে আলাদা ইফতারের আয়োজন। আর বিভিন্ন রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও ইফতার থাকে তাদের নিজস্ব কার্যালয়ে বা বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে।

গত বুধবার ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ইফতারের আয়োজন করছিলেন। ক্যাম্পাসে ভর্তির পর থেকে প্রতি রমজানে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে তাঁরা একসঙ্গে ইফতার করেন। এ বছর তাঁদের ইফতারে ছিল চকবাজার থেকে আনা নানান পদ। বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিজ আলম বলেন, সবাই মিলে গল্প করতে করতে ইফতারের মজাই আলাদা। রোজার ক্লান্তির কথা একদমই মনে থাকে না।

ক্যাম্পাসে ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে আড্ডার গল্পের পাশাপাশি তাঁরা ইফতারের আয়োজনে ব্যস্ত। সাধারণত থাকে ছোলা, মুড়ি, চপ, বেগুনি, জিলাপি, খেজুরের সঙ্গে থাকে মৌসুমি ফল, পুরান ঢাকার কোনো বিখ্যাত পদ ইত্যাদি।

কাঁঠালতলায় ইফতারের আয়োজন করছিলেন একই মেসে থাকা সাত শিক্ষার্থী। পাশেই মেস থাকার পরও তাঁরা ক্যাম্পাসে এসেছেন ইফতার করতে। তাঁরা বলেন, পরিবারের সঙ্গে এখন আর তেমন ইফতার করার সুযোগ হয় না। তাই যতটুকু সুযোগ পান মেসের সদস্যরাই একসঙ্গে ইফতার করার চেষ্টা করেন। ক্যাম্পাসে ইফতার করার মধ্যে আনন্দটাও অন্য রকম।

ক্যাম্পাসের ইফতারের আয়োজনে প্রায়ই যোগ দেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। এর মধ্য দিয়ে সামান্য সময়ের জন্য তাঁরা খুঁজতে চেষ্টা করেন ক্যাম্পাসের প্রিয় মুহূর্তগুলো।