রংপুরে হোটেল-রেস্তোরাঁ-বেকারির ধর্মঘট, মানুষজন ইফতার কিনতে পাননি

ধর্মঘটে বন্ধ আছে রংপুর নগরের রেস্তোরাঁ ও বেকারি। ছবি: মঈনুল ইসলাম
ধর্মঘটে বন্ধ আছে রংপুর নগরের রেস্তোরাঁ ও বেকারি। ছবি: মঈনুল ইসলাম

রংপুর নগরের রেস্তোরাঁ ও বেকারিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়ে আজ রোববার থেকে ধর্মঘট শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। খাবারের দোকানপাট বন্ধ থাকায় আজ রংপুর নগরের মানুষজন কোনো ইফতার কিনতে পারছেন না। তবে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কাল সোমবার থেকে এ ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন রেস্তোরাঁর মালিকেরা।

চলতি রমজান মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কয়েক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই জরিমানাকে অস্বাভাবিক দাবি করে রংপুর নগরের সব রেস্তোরাঁ, বেকারি, চায়নিজ রেস্তোরাঁ, ফাস্ট ফুড ও মিষ্টির দোকান আজ সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যার পর রংপুর জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ও বেকারি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নগরের জুম্মাপাড়ার মিঠু হোটেলকে ২ লাখ, জলকর এলাকার ফুলকলি ব্রেড অ্যান্ড কনফেকশনারিকে ৩ লাখ, এভরিডে ফুড প্রোডাক্টসকে ১ লাখ ও সোনালী বেকারিকে ৩ লাখ টাক জরিমানা করা হয়। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ব্যাংক ঋণ ও মহাজনের দেনার দায়ে জর্জরিত। এর ওপর যদি এভাবে অমানবিক ও অস্বাভাবিক হারে জরিমানা করা হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা ধ্বংস হয়ে যাবে।
ব্যবসায়ীরা আরও জানায়, শুধু কাঁচামাল কিনে খাদ্য প্রস্তুত ও বিক্রি করা হয়। রেস্তোরাঁ ও বেকারিতে ভেজাল দেওয়ার মতো কিছু নেই। কিন্তু রমজান মাসে অনেক রেস্তোরাঁ ও বেকারিকে অস্বাভাবিক হারে জরিমানা করা হয়। এতে করে ছোট-বড় এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

রংপুর নগরের রেস্তোরাঁ ও বেকারিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়ে আজ রোববার থেকে ধর্মঘট শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: মঈনুল ইসলাম
রংপুর নগরের রেস্তোরাঁ ও বেকারিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়ে আজ রোববার থেকে ধর্মঘট শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: মঈনুল ইসলাম

আজ ইফতারির বড়-ছোট সব দোকান বন্ধ থাকায় শত শত মানুষজন ইফতারি কিনতে পারেননি। শহরের কাচারি বাজারে বড় ইফতারির বাজারে ইফতারি কিনতে আসা চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন অফিস শেষে ইফতারি নিয়ে বাড়ি যাই। কিন্তু আজ ইফতারি কিনতে গিয়ে দেখি ইফতারির সব দোকান বন্ধ। কেনা ইফতারির ওপরই নির্ভর করে ইফতার। তাই বিপদে পড়েছি।’

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রংপুর জেলা শাখার সভাপতি আবদুল মজিদ খোকন বলেন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রংপুর জেলা শাখা এবং বাংলাদেশ ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরি মালিক সমিতি রংপুর জেলা শাখা যৌথভাবে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।
এদিকে এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে রেস্তোরাঁ ও বেকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক এনামুল হাবীব। বৈঠকে জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা সহনীয় পর্যায়ে যেন থাকে, সেটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
এদিকে জেলা প্রশাসকের এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট কাল সোমবার থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন।