ঘরবাড়ির সঙ্গে পুড়ে গেল শিশুটিও

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

হোটেল শ্রমিক বাবা রমজান আলী সকাল সকাল বেরিয়ে যান কাজে। দুই বছর বয়সী শিশুকে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে রেখে পাশের বাড়িতে গেছেন মা জেসমিন বেগম। কিছুক্ষণের মধ্যে স্থানীয়দের চিৎকারে জেসমিন বেগম বেরিয়ে দেখেন দাউ দাউ করে জ্বলছে তাঁর বাড়িঘর। আশপাশের লোকজন উদ্ধার করতে যেতে না যেতেই মায়ের চোখের সামনে ঘরবাড়ির সঙ্গে পুড়ে ছাই হয়ে গেল একমাত্র কন্যা। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সিতাগ্রাম এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয়দের দাবি, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে রমজান আলীর শোয়ার ঘরে আগুন লাগে। মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়লে রান্নাঘরসহ পুড়ে যায় সবকিছু। এ সময় ঘরে ঘুমিয়ে থাকা দুই বছর বয়সী রাদিয়া আক্তার রোজা পুড়ে মারা যায়।

অগ্নিকাণ্ডে ওই বাড়ির আসবাবপত্রসহ প্রায় তিন লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। এ সময় ঘরে থাকা ধান-চাল, নগদ টাকা ও আসবাবপত্রসহ সবকিছুই পুড়ে যায়।

ঘটনার পরপরই পঞ্চগড়-১ আসনের সাংসদ মজাহারুল হক প্রধান, পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা শবনম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

নিহত শিশুটির দাফন কার্যের জন্য সদর উপজেলা পরিষদ থেকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া পঞ্চগড়-১ আসনের সাংসদ মজাহারুল হক প্রধান ব্যক্তিগতভাবে ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগুন লেগেছে এমন চিৎকার শুনে আগুন নেভাতে আসি। কিন্তু আগুনটি মুহূর্তে বড় আকার ধারণ করে। কারও কোনো উপায় ছিল না শিশুটিকে উদ্ধার করার। বাড়ির গাছপালাগুলো পর্যন্ত পুড়ে গেছে।’

পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা নিরঞ্জন সরকার বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ওই বাড়ির দুটি ঘরই পুড়ে গেছে। কীভাবে আগুন লেগেছে তদন্ত না করে তা বলা সম্ভব নয়।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা শবনম বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করেছি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখা থেকে পরিবারটিকে খাবার এবং ঢেউটিন প্রদান করা হবে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য সদর থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’