১০টি দপ্তরে কর্মকর্তার পদ শূন্য সাত বছর

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা গঠিত হয়েছে প্রায় সাত বছর আগে। শুরু থেকেই প্রশাসনের ১০টি দপ্তরে কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া ও গলাচিপা উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এখানকার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ফলে ওই সব দপ্তরের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। এই অবস্থায় অতিরিক্ত দায়িত্বের বদলে পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গাবালী উপজেলা গঠিত হয়। নির্মিত হয় উপজেলা প্রশাসন ভবন। শুরু থেকেই উপজেলা প্রশাসনের ১৭টি কর্মকর্তা পদের মধ্যে ১০টি পদই শূন্য। শূন্যপদগুলো হচ্ছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি), উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা।

এসব শূন্য পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন গলচিপা উপজেলা থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আতিকুর রহমান তালুকদার, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ফেরদাউস রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ ও আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জুয়েল রানা।

এদিকে কলাপাড়া উপজেলা থেকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুস সামাদ ও সমবায় কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ ও মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার।

অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের আগুনমুখা ও আন্ধারমানিক নদী মোহনা পাড়ি দিয়ে বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলা সদরে গিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তবে অধিকাংশ কর্মকর্তা প্রতিদিন অতিরিক্ত দায়িত্বের কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। ফলে এসব দপ্তরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আর সেবাবঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার দুই লাখ মানুষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন এমন কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, নদীবেষ্টিত সাগর মোহনায় দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালী। ঝোড়ো বাতাস হলেই নদী উত্তাল হয়ে ওঠে। তখন যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। জরুরি না হলে তাঁরা নদী পাড়ি দিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে রাঙ্গাবালীতে যেতে চান না।

রাঙ্গাবালীর ইউএনও মাশফাকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার ১০টি কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। মূলত এই কর্মকর্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁর মূল পদায়িত উপজেলা থেকে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। এতে এই উপজেলার দাপ্তরিক বা প্রশাসনিক অনেক কাজ সময়মতো এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না। উপজেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।

ইউএনও জানান, এই অবস্থায় অতিরিক্ত দায়িত্বের বদলে পদায়নের জন্য ৬ মে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।