জাল দলিলের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক মারধরের শিকার

মোস্তফা মনজু
মোস্তফা মনজু

জামালপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জাল দলিলের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক মারধরের শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ওই সাংবাদিক হলেন মোস্তফা মনজু। তিনি দৈনিক ‘কালের কণ্ঠ’ পত্রিকার জামালপুর প্রতিনিধি।

সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দলিল লেখক হাবিবুর রহমান জামালপুর শহরের সিংহজানী মৌজার ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ জমির ভুয়া দলিল রেজিস্ট্রি করতে যান। সাব-রেজিস্ট্রার দলিলটি ধরে ফেলেন। এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে দুপুরে ওই কার্যালয়ে যান সাংবাদিক মোস্তফা মনজু্। তিনি এ ব্যাপারে দলিল লেখক হাবিবুর রহমানের বক্তব্য জানতে চান। এ সময় জমালপুর সদরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হাসানুজ্জামান খান, তাঁর ভাতিজা তুহিন খান, দলিল লেখক হাবিবুর রহমান, তাঁর সহকারী মো. উকিল মিয়াসহ সাত থেকে আটজন মিলে মোস্তফা মনজু্কে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওই ঘটনার পর মারধরের প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকেরা ওই কার্যালয়ে উপস্থিত হন। পরে জামালপুর প্রেসক্লাবে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন জামালুপর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান ডল, সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল, জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর সেলিম প্রমুখ। তাঁরা সাংবাদিক মোস্তফা মনজু্কে মারধরের তীব্র প্রতিবাদ ও দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান।

মারধরের শিকার সাংবাদিক মোস্তফা মনজু বলেন, ‘দলিল লেখক হাবিবুর রহমানের কক্ষে আমি ভুয়া দলিল জব্দের তথ্য নিচ্ছিলাম। তথ্য নেওয়ার সময় দলিল লেখকের সহকারী মো. উকিল ও কাউন্সিলর মো.হাসানুজ্জামান খানের ভাতিজা মো. তুহিন আমার সঙ্গে তর্ক করে এবং খুব খারাপ আচরণ করে। হঠাৎ দলিল লেখকের কক্ষে ওই কাউন্সিলর ঢুকেই আমাকে মারধর করতে থাকেন। এ সময় কাউন্সিলরের লোকজন ও তাঁর আত্মীয়স্বজন আমাকে ব্যাপক মারধর করেন। যাঁরা আমাকে রক্ষা করতে আসেন, তাঁরাও মারধরের শিকার হন।’ তিনি বলেন, ‘ওই জাল দলিলটি ওই কাউন্সিলরের লোকজন করতে গিয়েছিলেন। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের বড় একটি চক্র নিয়ন্ত্রণ করেন কাউন্সিলর। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

এই ঘটনায় অভিযুক্ত কাউন্সিলর মো. হাসানুজ্জামান খানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর ফোনটি অন্য একজন ব্যক্তি ধরে বলেন, ‘কাউন্সিলর নামাজ পড়তে গেছেন। নামাজ পড়ে আসলে ফোন দিতে বলব।’ কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফোন দেওয়া হলেও কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান ফোন ধরেননি।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান বলেন, ‘সাংবাদিক মারধরের বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে দুই গাড়ি পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ দিকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন ছিল।