অনুমোদিত নকশাবহির্ভূত ৮৫ ভবনের তালিকা তৈরি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন।  ছবি: প্রথম আলো
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ৮৫টি অনুমোদিত নকশাবহির্ভূত ভবন ও নকশা অনুমোদন ব্যতীত ৯টি ভবনের তালিকা তৈরি করেছে। এ তালিকা জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া হবে। এরপর সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন মিলে ভবনের মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

গত সোমবার নগর ভবনের অন্তত তিনজন প্রকৌশলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তা ছাড়া গত মাসে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হকের নেতৃত্বে অন্তত ৩০টি নকশাবহির্ভূত ভবন চিহ্নিত করে ব্যানার টানানো হয়। একই সঙ্গে ভবনের মালিকদের নোটিশ দেওয়া হয়।

নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, ১৬ মে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নকশা অনুমোদন ব্যতীত ও অনুমোদিত নকশাবহির্ভূতভাবে নির্মিত আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের তালিকা তৈরি করার এক অফিস আদেশ জারি করেন মেয়র মনিরুল হক। এতে নগর ভবনের সহকারী প্রকৌশলী আবদুস সালাম, উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুর রব ও কাজী মাকসুদুর রহমান এবং কানুনগো মো. আবুল কাশেমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মেয়রের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্তৃপক্ষের নকশা অনুমোদন ব্যতীত আবাসিক ও বাণিজ্যিক ইমারত নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তার জন্য ছেড়ে দেওয়া জায়গার মধ্যে নকশা অনুমোদনের পর ভবন বর্ধিত করে অঙ্গীকার ভঙ্গ করা হচ্ছে। কেউ কেউ ভবনের উচ্চতা ও তলা বৃদ্ধি করেছেন; যা ইমারত নির্মাণ আইন ও বিধিপরিপন্থী। এই প্রেক্ষাপটে সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯-এর ১৭ নম্বর ধারামতে, ইমারত নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাই চারজনকে নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের ভবনের তালিকা তৈরির জন্য বলা হয়। এরপর তাঁরা কয়েক দিনে অনুমোদিত নকশাবহির্ভূত ৮৫টি ইমারতের তালিকা তৈরি করেন। এর মধ্যে দেখা গেছে, কোনো কোনো ভবনের মালিক পাঁচতলার অনুমোদন নিয়ে সাততলা করেছেন। কেউ ভবন নির্মাণের জন্য কোনো জায়গা ছাড় দেননি।

এ ছাড়া নকশার অনুমোদন না নিয়ে কুমিল্লা নগরের দক্ষিণ চর্থা এলাকায় পাঁচতলা একটি, কাসেমুল মাদ্রাসার পাশে আটতলা, কান্দিরপাড়ে নয়তলা, ঠাকুরপাড়ায় নয়তলা, ঝাউতলায় ছয়তলা, কচুয়া এলাকায় তিনতলা, উত্তর বাগমারা, তালপুকুরপাড় ও দক্ষিণ রসুলপুর এলাকায় দোতলা ভবনের কাজ চলছে।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন চিশতী বলেন, ‘জেলা প্রশাসক চলতি মাসের জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অনুমোদনহীন ভবনের তালিকা সম্পর্কে জানতে চান। তখন আমরা বলেছি, তালিকা দেব।’

নগর ভবনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখ নূরুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের কাজ তালিকা তৈরি করে দেওয়া। আমরা তালিকা করে মেয়রের কাছে দেব। এরপর তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠাবেন।’

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৯৪টি ভবনের তালিকা করা হয়েছে। আরও হবে।’

মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, ৪ ও ১৬ এপ্রিল দুই দফা অভিযান চালিয়ে ৩০টি নকশাবহির্ভূত ভবন চিহ্নিত করে ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তালিকা করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।