নুসরাত হত্যা মামলা এখন নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে

নুসরাত জাহান।
নুসরাত জাহান।

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার ধার্য তারিখে ফেনীর আমলি আদালতের বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইন মামলাটির বদলির আদেশ দেন। আদেশে আগামী ১০ জুন মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, এ সময় ওই মামলায় আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রভুক্ত ১৬ জনসহ গ্রেপ্তার ২১ আসামির সবাই উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মামলার বাদী নুসরাতের ভাই আবদুল্লাহ আল নোমানও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল বুধবার এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার ২১ জন আসামির মধ্যে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ১৬ জনের মধ্যে মামলার এজাহারনামীয় আটজন এবং এজাহারবহির্ভূত আটজন আসামি রয়েছেন।

কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী জানান, আগামী ১০ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে।

এ মামলার শুরুতে একজন আইনজীবী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার পক্ষে দাঁড়ানোয় আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরপর ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতি কোনো আইনজীবী যেন আসামির পক্ষে না দাঁড়ান, সে অনুরোধ জানায়। ফলে, গত দুই মাসে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবীকে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। আজ প্রথম একজন আইনজীবী আদালতে একজন আসামির পক্ষে দাঁড়ান এবং জামিনের আবেদন জানান। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পরবর্তী ধার্য তারিখে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার পরামর্শ দেন।

এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের মধ্যে ১২ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া ১৬৪ ধারায় সাতজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেন এবং ১৬১ ধারায় ৬৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

গত ৬ এপ্রিল ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুরুতর অবস্থায় ওই রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।

এর আগে গত ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। গত ৭ এপ্রিল নুসরাত চিকিৎসকদের কাছে দেওয়া শেষ জবানবন্দিতে বলেছিলেন, ‘নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরা পাঁচজন তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।’ তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলায়ও খুব শিগগির অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।