ইন্দুরকানিতে স্কুলছাত্র হত্যা, ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার সালাউদ্দিন (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রকে হত্যা ও পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে নিহত সালাউদ্দিনের বাবা সিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের পাঁচজনকে আসামিকরে মামলাটি করেন। এই ঘটনায় নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তার সোহান শেখের (১৫) স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী উপজেলার উমেদপুর খাল থেকে নিখোঁজের দুই দিন পর সালাউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সালাউদ্দিন উপজেলার উমেদপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। সে পাড়েরহাট রাজ লক্ষ্মী স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে সালাউদ্দিন শবে কদরের নামাজ পড়ার জন্য উমেদপুর মসজিদের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সোহান শেখসহ কয়েক জন কিশোর পটকা ফাটানোর কথা বলে সালাউদ্দিনকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর কোমলপানীয়র সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে সালাউদ্দিনকে অচেতন দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে খালে ফেলে দেন। রাতে সালাউদ্দিন বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। এ ঘটনার পর দিন গত রোববার সকালে একটি মুঠোফোন দিয়ে সালাউদ্দিনের বাবার কাছে ফোন দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ চান সোহান ও তার বন্ধুরা। এরপর সালাউদ্দিনের বাবা সিদ্দিকুর রহমান ইন্দুরকানি থানায় নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে থানা-পুলিশও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সালাউদ্দিনকে উদ্ধারে অভিযান চালায়। এই ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নয়জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর উপজেলার উমেদপুর গ্রামের হায়তার শেখের ছেলে সোহান শেখ পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ড ও মুক্তিপণ দাবির কথা স্বীকার করে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক এ কে এম মিজানুল হক বলেন, এ ঘটনায় সোহান শেখ (১৫), মারুফ শেখ (১৫),তন্ময় সমাদ্দার (১৫), মাসুদ শেখ (১৪), কবির শেখ (৪৫), হাফিজুর হাওলাদার (১৮), সাগর মুন্সি (১৮), নাঈম উদ্দিন (১৪), বেল্লাল মোল্লাকে (১৪) আটক করেছেন। আটক ব্যক্তিদের বাড়ি পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি উপজেলা ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। মুক্তিপণ আদায়ে ব্যবহৃত মুঠোফোন শনাক্ত করে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এদের আটক করা হয়। মূলত মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সালাউদ্দিনকে কৌশলে অপহরণ করা হয়। এরপর বিষয়টি যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

নিহতের সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কয়েক দিন আগে আমি ছয় লাখ টাকায় জমি বিক্রি করি। অপহরণকারীরা ওই টাকার কথা জেনে আমার ছেলেকে হত্যা করে মুক্তিপণ দাবি করে।

ইন্দুরকানি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আজ মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।