শিবপুরে নিখোঁজের দুদিন পর মিলল তরুণীর লাশ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর শিবপুরে নিখোঁজের দুদিন পর সাবিনা (২১) নামের এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের কাজীরচর গ্রামের একটি কলাখেতে থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ধারণা, ওই তরুণীকে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত তরুণীর পরিবার ও স্থানীয় লোকজন বলছেন, ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হন সাবিনা। তিনি শিবপুরের মাছিমপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের আফিয়া বেগমের মেয়ে। জন্ম থেকেই সাবিনার হাত দুটো স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় কিছুটা খাটো। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার পরে মানুষের কটূক্তির কারণে তিনি আর বিদ্যালয়ে যাননি । আফিয়া বেগম ও সাবিনা এলাকায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।

পুলিশ বলছে, শনিবার দুপুরে স্থানীয় লোকজনের কাছে খবর পেয়ে তারা সাবিনার লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু সে সময় তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে ওই লাশ পাঠানো হয়। পরে মধ্যপাড়া গ্রামে দুদিন ধরে এক তরুণী নিখোঁজ আছেন— এমন খবর পেয়ে পুলিশ ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। রাত নয়টার দিকে স্বজনেরা মর্গে এসে সাবিনার লাশ শনাক্ত করেন।

সাবিনার মা আফিয়া বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি তরকারি কাটছিলেন। এমন সময় তাঁর মেয়ে এক বান্ধবীর নাম উল্লেখ করে তাঁর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হন। সন্ধ্যার দিকে তিনি সাবিনার মুঠোফোন কল করে দেখেন তা বন্ধ আছে। এরপর থেকে সাবিনার আর কোনো খোঁজ মেলেনি। সাবিনার ওই বান্ধবীর বাড়িতেও একাধিকবার ফোন করা হয়। তাঁরাও জানিয়েছেন, সাবিনা তাদের বাড়িতে যাননি। আফিয়া বেগম বলেন, তাঁর মেয়ে মুঠোফোনে প্রচুর কথা বলত। তবে কার সঙ্গে বলত, তা তিনি জানেন না।

সাবিনার গৃহকর্ত্রী ফারিজা সুলতানা বলেন, ‘প্রায় ২৫ বছরের ওপরে হয়েছে আফিয়া বেগম আমাদের বাড়িতে কাজ করেন। সাবিনার জন্মও হয়েছে আমাদের বাড়িতে। অনেক দিন ধরে লক্ষ্য করেছি, সে ফোনে প্রচুর কথা বলে। আমি ও তাঁর মা মিলে অনেক শাসনও করতাম। কিন্তু কিছুতেই সে কথা শুনত না। শেষ দিকে বিরক্ত হয়ে আর কিছু বলতাম না।’

শিবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম খান বলেন, ‘সাবিনাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। ঘটনাস্থলের আশপাশের কেউ এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। খুব দ্রুত পুলিশের তদন্তে আসামিদের নাম বেরিয়ে আসবে।’