প্রায় ৫০০ বছরের ঈদমেলা

ঈদ আসে, সঙ্গে নিয়ে আসে মেলা। রাজশাহীর বাঘার মানুষের কাছে ঈদের আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করে ঈদমেলা। ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে এ মেলা হয়ে ওঠে সব মানুষের মিলনমেলা। প্রায় ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই ঈদমেলা প্রতিবছর ঈদের দিন থেকে শুরু হয়। চলে সপ্তাহব্যাপী। এবার চলবে এক মাস।

বাঘা কেন্দ্রের প্রধান ইসলাম প্রচারক হজরত শাহ মোয়াজ্জেম দানিশমন্দ শাহ দৌলা (রহ.)–এর ৪৯০তম ও তাঁর ছেলে হজরত শাহ্ সুফি মাওলানা আবদুল হামিদ দানিশমন্দ কতুবুল আফতাব (রহ.)–এর ৩৯১তম ওরস মোবারক উপলক্ষে ঈদুল ফিতরের দিন ও তার পরের দিন বাঘা দরগা শরিফে বড় আয়োজন করা হয়। বাঘা মাজার ওয়াক্‌ফ এস্টেট পরিচালনা কমিটি ধর্মীয়–আচার অনুষ্ঠান ও তবারক বিতরণের আয়োজন করে থাকে। এতে প্রচুর লোক অংশ নেন। এই আয়োজনকে ঘিরে বাঘা ওয়াক্‌ফ এস্টেট চত্বরে মেলা বসে। মেলা বাঘা হাইস্কুল মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে।

মেলায় সার্কাস, নাগরদোলা, মৃত্যুকূপ খেলা, জাদু প্রদর্শনীসহ নানা বিনোদনমূলক আয়োজন করা হয়েছে। আর আসবাবসহ মেলায় হরেক রকম পসরা ও মিষ্টির দোকানে উপচে পড়া ভিড় লেগে রয়েছে।

মোটরসাইকেলে মৃত্যুকূপ খেলা দেখাতে দিনাজপুর সদর থেকে এসেছেন নাজমুল হাসান (১৮)। এইচএসসি পাস নাজমুল সারা দেশে এই খেলা দেখিয়ে বেড়ান। সঙ্গে এসেছেন তাঁর মা–বাবাও। মা আবেদা বেগম বললেন, এটা তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা। ছেলের বাবা ৪০ বছর এই খেলা দেখিয়েছেন। এখন ছেলে দেখাচ্ছেন। নাজমুল হাসান একটি প্রদর্শনীতে ২৫০ জন দর্শককে ১০ মিনিট করে খেলা দেখাচ্ছেন। মেলায় এসেছে চারটি নাগরদোলা।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই মেলায় মিষ্টির দোকানিরা আসেন। নাটোরের নলডাঙ্গা এলাকা থেকে মেলায় মিষ্টির দোকান নিয়ে এসেছেন মামুনুর রশিদ। বললেন, সিলেট, যশোর কুমিল্লা, রংপুর, দিনাজপুর— যেখানে মেলা হয়, তিনি সেখানে মিষ্টির দোকান নিয়ে যান। প্রতিবছরই বাঘার ঈদমেলায় আসেন।

হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, তাঁর জানামতে দেশের সবচেয়ে পুরোনো ঈদমেলা হচ্ছে বাঘার মেলা।