মাটির বদলে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে কাদা

কাঁচা সড়কের সংস্কারকাজে মাটির পরিবর্তে ফেলা হচ্ছে কাদা। গত সোমবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা গ্রামের মনাই মহাজনের বাড়ির সামনে।  প্রথম আলো
কাঁচা সড়কের সংস্কারকাজে মাটির পরিবর্তে ফেলা হচ্ছে কাদা। গত সোমবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা গ্রামের মনাই মহাজনের বাড়ির সামনে। প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডে কাঁচা সড়কের সংস্কারকাজে মাটির পরিবর্তে কাদা ফেলা হচ্ছে। এতে লোকজনের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। তবে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আশপাশের নিচু জমি বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়ায় এর বিকল্প নেই।

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের (৪০ দিন) একটি প্রকল্পের আওতায় কর্মধার মহিষমারা গ্রামের আরব আলীর বাড়ির সামনে থেকে কামাল দিঘিরপাড় হয়ে মনাই মহাজনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার কাঁচা সড়কের সংস্কারকাজ চলছে। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ৮ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এই সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয়। ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। এ প্রকল্পটির সভাপতি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হোসেন আলী। প্রকল্পে ৭০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। শ্রমিকদের মাথাপিছু দৈনিক মজুরি ২০০ টাকা। এ কাজে সড়কে মাটি ফেলার কথা। কিন্তু এর পরিবর্তে বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়া আশপাশের নিচু জমি থেকে কোদাল দিয়ে কাদা তুলে সড়কে ফেলা হচ্ছে।

সম্প্রতি জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ ইউসুফ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি সড়কে কাদা ফেলায় মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি ‘কুলাউড়া-সমস্যা ও সম্ভাবনা’ নামের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক দলের পাতায় তুলে ধরেন। পরে এটি ভাইরাল (ছড়িয়ে) হয়ে পড়ে।

স্থানীয় কর্মধা গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাহীদ আলী মুঠোফোনে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি ভাঙাচোরা। এমনিতেই মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এখন মাটির পরিবর্তে কাদা ফেলায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। কাদা মাড়িয়ে চলতে হচ্ছে। সরকারের অর্থের অপচয় হচ্ছে। প্রয়োজনে উঁচু কোনো স্থান থেকে মাটি এনে সড়কে ফেলা যেত।

তবে প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য হোসেন আলী গত মঙ্গলবার মুঠোফোনে বলেন, সম্প্রতি বৃষ্টিতে সড়কের আশপাশের নিচু জমিগুলো ডুবে গেছে। এ কারণে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে কাদা ফেলা হচ্ছে। তবে রোদে কাদা শুকিয়ে গেলে চলাফেরায় কোনো সমস্যা হবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবুল লাইছ প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের কাজে কোনোভাবেই কাদা ব্যবহার করা যাবে না। ফেসবুকে তিনি বিষয়টি দেখেছেন। এরপর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে (পিআইও) ডেকে এ কাজ বন্ধ করে দিতে বলেছেন। সড়কে কাদা ফেলা হলে কাজের বিল দেওয়া হবে না।