ভাঙনের মুখে দুটি বিদ্যালয়

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাইজ্জারচর সমির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় ও কাইজ্জারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। গতকাল সকালে।  প্রথম আলো
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাইজ্জারচর সমির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় ও কাইজ্জারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। গতকাল সকালে। প্রথম আলো

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাইজ্জারচরে দুটি বিদ্যালয় পদ্মার ভাঙনের হুমকিতে আছে। বিদ্যালয়ের পাশে আছে ছোট একটি বাজার। বাজারের ১৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) শরীয়তপুর শাখা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জাজিরার বিলাশপুর ইউনিয়নের পদ্মার তীরে ১৯৬৬ সালে সমির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। ১৯৭০ সালে পদ্মার ভাঙনে বিদ্যালয়টি বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন বন্ধ হয়ে ওই এলাকার পাশে কাইজ্জারচর জেগে ওঠে। ১৯৭৭ সালে সেখানে পুনরায় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু করা হয়। তখন নামকরণ করা হয় কাইজ্জারচর সমির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়। তখন ওই বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কাইজ্জারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। বর্তমানে উচ্চবিদ্যালয়ে ৪৫০ জন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয় দুটিতে তিনটি পাকা ও তিনটি টিনের ভবন রয়েছে। বিদ্যালয়কে ঘিরে কাইজ্জারচর বাজার গড়ে উঠেছে। ওই বাজারে একটি সরকারি টোলঘর, একটি মসজিদ ও ১৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সমির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের একতলা নতুন ভবনটির একদম পেছনে পদ্মা নদী। বিদ্যালয়ের ১৪০ মিটার অংশে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু ফেলা বস্তার দুই প্রান্ত দিয়েই ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীতে পানির স্রোত ও ঢেউ বাড়লে ভাঙন প্রবল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কাইজ্জারচর সমির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, পদ্মা নদী বিদ্যালয়ের সীমানায় প্রবেশ করেছে। ভাঙনের কবলে পড়ে বিদ্যালয়ের ভবনগুলো বিলীন হয়ে যেতে পারে। গত বছর ভাঙন শুরু হলে আতঙ্কে তাঁরা এখান থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশে ৩০ শতাংশ জায়গা ভাড়া নেন। যাতে ভাঙনের কবলে পড়লেও বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ না হয়।

কাইজ্জারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা পারভিন বলেন, ‘ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে আছি। নদীর যা অবস্থা, আগামী বর্ষায় কী হবে আল্লাহই জানেন। ভাঙনে বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হলে শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোথায় দাঁড়াব?’

কাইজ্জারচর বাজারের ব্যবসায়ী দিদারুল ইসলাম বলেন, গত বছর ভাঙনে এই এলাকার অন্তত ৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ক্রমেই নদী দক্ষিণে প্রবেশ করছে। আর তাঁদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

শরীয়তপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, জাজিরা ও নড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে গত বছর তীব্র ভাঙন ছিল। নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ চলছে। ওই প্রকল্প এলাকার বাইরে যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে, সেখানে অস্থায়ী ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।