গাছে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতন ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার

গাছে বেঁধে নির্যাতনের ফলে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডলি খানমের গর্ভপাত ঘটে। ১০ মের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
গাছে বেঁধে নির্যাতনের ফলে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডলি খানমের গর্ভপাত ঘটে। ১০ মের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

শেরপুরের নকলায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ডলি খানমকে (২২) গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে ওসি কাজী শাহনেওয়াজকে প্রত্যাহারের এ আদেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

এ ঘটনায় গঠিত জেলা পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান শেরপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম আজ শনিবার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ১৮ জুন মঙ্গলবার নকলা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দেওয়া মাত্রই ওসি শাহনেওয়াজকে নকলা থানা থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। এর আগে একই অভিযোগে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নির্দেশে ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুককে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় নাসিমা আক্তার ছাড়া আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি বলেও জানান তিনি।

এদিকে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ডলি খানমের শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাঁকে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডলিকে হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা রবিউল হাসান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, রক্তক্ষরণ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ডলিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ডলির স্বামী মো. শফিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ র‍্যাব, পুলিশ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। ব্র্যাকের কর্মকর্তারা আমাদের আইনি সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন। এতে আমরা স্বস্তি বোধ করছি।’ তবে স্ত্রী ডলি পুনরায় অসুস্থ হওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ১০ মে নকলা উপজেলার কায়দা এলাকায় গাছে বেঁধে নির্যাতনের ফলে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডলি খানমের গর্ভপাত ঘটে। এ ঘটনায় ডলি বাদী হয়ে নকলা থানায় ও তাঁর স্বামী শফিউল্লাহ বাদী হয়ে শেরপুরের সি আর আমলি আদালতে দুটি পৃথক মামলা করেন। এসব মামলায় শফিউল্লাহর তিন বড় ভাই নেছারউদ্দিন, আবু সালেহ ও সলিমউল্লাহ, নেছারের স্ত্রী লাখী আক্তার, তাঁর বোন নাসিমা ও নকলা পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর রূপালী বেগমসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়।


আরও পড়ুন...