বাঁকা পা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুরা পেল সুস্থ জীবন

বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস উপলক্ষে গত মঙ্গলবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ চত্বরে বাঁকা পা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুরা শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।  ছবি: প্রথম আলো
বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস উপলক্ষে গত মঙ্গলবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ চত্বরে বাঁকা পা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুরা শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। ছবি: প্রথম আলো

দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম যোবায়ের আহম্মেদ, চিত্রাঙ্কনে রাকিব হোসেন প্রথম স্থান অর্জন করেছে। গত মঙ্গলবার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মাঠে যোবায়ের ও রাকিবের মতো অনেক শিশু ফুটবল খেলেছে। অথচ তারা বাঁকা পা নিয়ে জন্মেছিল। চিকিৎসার মাধ্যমে পায়ের স্বাভাবিক গড়ন ফিরে পাওয়ায় এসব শিশুর অভিভাবকেরাও উচ্ছ্বসিত।

‘বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস’ উপলক্ষে গত মঙ্গলবার দুই শতাধিক শিশু জড়ো হয়েছিল এই খেলার মাঠে। তাদের জন্য ফুটবল খেলাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতা শেষে কলেজের সামনে অভিভাবকদের সঙ্গে শিশুরা শোভাযাত্রায়ও অংশ নেয় । ৩ জুন ছিল বিশ্ব ক্লাবফুট দিবস। এ উপলক্ষে গত মঙ্গলবার বগুড়ায় এই শোভাযাত্রা বের করা হয়। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগিতায় অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ওয়াক ফর লাইফ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

শোভাযাত্রা শেষে মেডিকেল কলেজের মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল আলম। বক্তব্য দেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম রসুল, মেডিসিন বিভাগের প্রধান জাকির হোসেন প্রমুখ।

জানা গেছে, ওয়াক ফর লাইফ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিনা মূল্যে ক্লাবফুট বা বাঁকা পা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের চিকিৎসাসেবা দেয়। সপ্তাহে প্রতি রোববার হাসপাতালের বহির্বিভাগের ১৫০ নম্বর কক্ষে ওয়াক ফর লাইফ ক্লিনিক বিনা মূল্যে এই চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এর তত্ত্বাবধানে রয়েছেন অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল আলম ।

>ওয়াক ফর লাইফ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাঁকা পা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছে। এ পর্যন্ত বগুড়ায় ৬৫০ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে।

দ্য গ্লেনকো ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি এবং ওয়াক ফর লাইফ সংস্থার বগুড়ার ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক ও ফিজিওথেরাপিস্ট মমতাজ সুলতানা জানান, এই চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম দেশের ২৯টি জেলায় অব্যাহত রয়েছে। দেশে প্রতিবছর প্রায় ৪ হাজার শিশু এই ত্রুটি নিয়ে জন্মায়। তাঁদের চিকিৎসায় এ পর্যন্ত বগুড়া ৬৫০ জন শিশুর পা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।

হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজাউল আলম জানান, আগে বাঁকা পায়ের চিকিৎসা খুব জটিল ছিল। অস্ত্রোপচার করেও পুরোপুরি ভালো হতো না। বর্তমানে ওয়াক ফর লাইফ ক্লিনিকের চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুদের পা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।