মাছের পোনা বহনে পৃথক বগির দাবিতে রেল অবরোধ

কমিউটার ট্রেনে মাছের পোনা পরিবহনের জন্য পৃথক বগি দেওয়া এবং ময়মনসিংহের ধলা রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম চালুর দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও মাছ ব্যবসায়ীরা।

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় অবস্থিত ধলা রেলওয়ে স্টেশনের দাপ্তরিক সব কার্যক্রম বন্ধ আছে। লোকাল ট্রেনগুলো যাত্রাবিরতি করলেও টিকিট বিক্রি হয় না। মালামাল বুকিং হয় না। এতে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও মাছের পোনা ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। এসব সমস্যা সমাধানের আশায় আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত ধলা স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করে রাখেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলসড়কে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়।

রেলওয়ে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, ধলা এলাকায় প্রচুর পরিমাণে মাছের পোনা উৎপাদন করা হয়। ওই পোনা ময়মনসিংহ ও আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে সকালে জামালপুর থেকে ঢাকাগামী কমিউটার ট্রেনে করে পোনা পরিবহন করেন ব্যবসায়ীরা। তবে ট্রেনের বগিতে মাছের পোনা পরিবহন করলে যাত্রীদের অসুবিধা হয়। এ কারণে বেসরকারিভাবে পরিচালিত কমিউটার ট্রেনের কামরায় পোনা পরিবহন করতে দেওয়া হয় না। ব্যবসায়ীরা ছাদে পোনা পরিবহন করতে চাইলে নিরাপত্তার কারণে ছাদেও উঠতে দেয় না ট্রেন কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার টঙ্গীতে কমিউটার ট্রেনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পোনা ব্যবসায়ীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে আজ কমিউটার ট্রেন আটকে মাছের পোনা পরিবহনের জন্য পৃথক বগি দাবি করা হয়।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল সাড়ে সাতটার দিকে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় কমিউটার ট্রেনটি। ধলা স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে সকাল সাড়ে আটটায়। ধলা স্টেশনে যাত্রাবিরতির সময় স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা ট্রেনের ছাদে মাছ পরিবহন করতে চান। ওই সময় ট্রেনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা ছাদে পরিবহন করতে নিষেধ করেন। পরে মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ধলা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় কমিউটার ট্রেনটির সামনে রেললাইন অবরোধ করেন। কিছু সময়ের মধ্যে শত শত মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা উপস্থিত হয়ে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারী মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ধলা রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম আবারও চালু ও কমিউটার ট্রেনে মাছ পরিবহনের জন্য একটি পৃথক বগি সংযোজনের দাবিতে স্লোগান দেন। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ধলা স্টেশনে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে তাদের দাবি রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট জাহিরুল ইসলাম জানান, ধলা স্টেশনে দুই ঘণ্টা রেললাইন অবরোধ করে রাখায় দুটি আন্তনগর ও একটি লোকাল ট্রেন ময়মনসিংহ, ফাতেমানগর ও গফরগাঁও স্টেশনে আটকা পড়ে। পরে অবরোধ তুলে নেওয়ার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।