অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ব্যাংকার কারাগারে

জনতা ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফখরুল আলম।
জনতা ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফখরুল আলম।

ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির মামলায় জনতা ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফখরুল আলমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার জামিন নিতে গেলে তা নামঞ্জুর করেন মহানগর দায়রা জজ আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার পর উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন ফখরুল।

দুদকের সরকারি কৌঁসুলি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, আদালত ফখরুল আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

দুদক সূত্র অনুযায়ী, ভুয়া বিলের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা, জাল কাগজপত্র তৈরি করে জালিয়াতি, পরস্পর যোগসাজশ, প্রতারণায় সহায়তা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলার অন্যতম আসামি ফখরুল আলম। মামলার পরই তিনি উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন। গতকাল স্থায়ী জামিন নিতে মহানগর দায়রা জজ আদালতে গেলে তাঁর জামিন নামঞ্জুর হয়।

জনতা ব্যাংক ইমামগঞ্জ করপোরেট শাখার মাধ্যমে এ জালিয়াতি হয়। ক্রিসেন্টের কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনা ২ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। বিদেশে রপ্তানির ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা আটকা রয়েছে। সব মিলিয়ে গ্রুপটি সরকারি ব্যাংক ও সরকারের তহবিল থেকে মাত্র পাঁচ বছরেই নিয়ে নিয়েছে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। ২০১৩ সাল থেকে এসব অনিয়মের শুরু হয়।

দুদকের মামলায় মালিকদের মধ্যে সাতজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের, পরিচালক সুলতানা বেগম ও রেজিয়া বেগম, রুপালি কম্পোজিট লেদারের পরিচালক সামিয়া কাদের নদী, রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান ও চলচ্চিত্র প্রযোজক আবদুল আজিজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিটুন জাহান মীরা এবং লেসকো লিমিটেডের পরিচালক হারুন-অর-রশীদ।

ব্যাংকারদের মধ্যে আসামি করা হয়েছে ১৫ জনকে। তাদের অন্যতম হলেন জনতা ব্যাংকের তৎকালীন দুই জিএম মো. ফখরুল আলম (বর্তমানে কৃষি ব্যাংকের ডিএমডি) ও মো. জাকির হোসেন (বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি), জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম (সোনালী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি), ডিজিএম মুহাম্মদ ইকবাল, এ কে এম আসাদুজ্জামান ও কাজী রইস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

এর আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি এই ঘটনায় মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মামলার পরপরই ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরকে গ্রেপ্তার করে সংস্থাটি।