ভুয়া প্রশ্নপত্রসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষক আটক

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ভুয়া প্রশ্নপত্রসহ তিন শিক্ষকসহ চারজনকে আটক করেছে গাইবান্ধা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গাইবান্ধা, রংপুর, ২২ জুন। ছবি: প্রথম আলো
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ভুয়া প্রশ্নপত্রসহ তিন শিক্ষকসহ চারজনকে আটক করেছে গাইবান্ধা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গাইবান্ধা, রংপুর, ২২ জুন। ছবি: প্রথম আলো

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। গতকাল শুক্রবার সকালের দিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলা থেকে তাঁদের আটক করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। 


গাইবান্ধার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আজ শনিবার দুপুর ১২টায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের ফজলুল হক স্বপন (৩৮)। তিনি আরিফখা বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। একই উপজেলার খামার পীরগাছা গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪০)। তিনি দক্ষিণপাড়া পীরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। পলাশবাড়ী উপজেলার কিত্তারপাড়া গ্রামের আঞ্জুমান আরা (৪৫)। তিনি কিত্তারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আরিফখা বাসুদেবপুর গ্রামের ফারুক হোসেন (২৪)। এর মধ্যে ফজলুল হক, রফিকুল ইসলাম ও ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় ও আঞ্জুমান আরার বিরুদ্ধে পলাশবাড়ী থানায় মামলা হয়েছে। প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ এনে এসব মামলা করেছে পুলিশ।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলার মধ্যধানঘড়া এলাকার একটি বাসায় ১৬ পরীক্ষার্থীকে জড়ো করেন আটক ব্যক্তিদের তিনজন। উত্তর সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে এ সময় শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের থেকে ২০ হাজার করে টাকা নেন তারা। নিয়োগ পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন হবে আটক তিন শিক্ষকের দুজন ওই পরীক্ষার্থীদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ সময় গাইবান্ধা ডিবি পুলিশ ওই দুই শিক্ষকসহ তিনজনকে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছে থাকা কথিত প্রশ্নপত্রের ফটোকপি ও নিয়োগ পরীক্ষার ১৮টি প্রবেশপত্রের ফটোকপি জব্দ করা হয়।

ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) আবদুল আউয়াল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) ময়নুল ইসলাম, গাইবান্ধা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মজিবুর রহমান প্রমুখ।

ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, গতকাল সকাল সাড়ে সাতটায় পলাশবাড়ী উপজেলার নুনিয়াগাড়ি প্রফেসরপাড়া এলাকায় নিয়োগ পরীক্ষার্থীদের চারজনকে কথিত উত্তরপত্র বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন শিক্ষক আঞ্জুমান আরা। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ আঞ্জুমান আরাসহ পাঁচজনকে আটক করে। এ সময় আঞ্জুমান আরার স্বামী তাজুল ইসলাম পালিয়ে যান। পরে চারজন পরীক্ষার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই অভিযানেও কথিত প্রশ্ন, উত্তর ও একটি মোবাইল জব্দ করা হয়। আটক ব্যক্তিরা ডিবি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না। আটক ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন বলেন, গাইবান্ধার সাতটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ আছে প্রায় ৬০০টি। এসব শূন্যপদ পূরণে আবেদন জমা পড়ে ২৫ হাজার ৭৬৬টি। এর মধ্যে গতকাল ১৮ হাজার ৫৫৫ পরীক্ষায় অংশ নেন। অনুপস্থিত ছিলেন ৭ হাজার ২০৯ জন। অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে পাঁচজনকে বহিষ্কার করা হয়।