বিরোধিতার পরও হবিগঞ্জে মিজানের জয় 'ব্যক্তি ইমেজে'

মিজানুর রহমান
মিজানুর রহমান

নির্বাচনের শুরু থেকেই নিজ দলের একাংশ প্রতিবাদ-সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বিরোধিতা করেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় অসহযোগিতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল হবিগঞ্জ পৌরসভার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমানের। তবে সব বাধা কাটিয়েই তিনি ব্যক্তি ইমেজের কারণে জয়ী হয়েছেন বলে মনে করছেন এলাকার ভোটাররা।

হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে উপনির্বাচন গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে চারজনই ছিলেন আওয়ামী লীগের। যে কারণে এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমান ১৩ হাজার ২০৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নীলাদ্রি শেখর পুরকায়স্থ পান ৫ হাজার ৫৮৭ ভোট। দুজনের ভোটের ব্যবধান ৭ হাজার ৬২১।

এ নির্বাচনে শুরু থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমানের বিরোধিতা করে আসছিল তাঁর দলের একটি অংশ। এমনকি তারা রাজপথে প্রতিবাদ-সমাবেশ ও মানববন্ধন করে তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবি জানায়। সেখানে সফল হতে না পেরে দলের এ অংশটি বিদ্রোহী প্রার্থী হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নীলাদ্রি শেখর পুরকায়স্থকে সমর্থন দেয় এবং তাঁর পক্ষে কাজ করে সরাসরি। এসব কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমান নির্বাচনে দলের কাউকে পাশে পাননি। নিজের ব্যক্তিগত কিছু সমর্থক ও এলাকার নির্দলীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে মাঠে লড়াই করেন। অবশেষে সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি উল্লেখিত ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। তাঁর বিপরীতে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মর্তুজ আলী এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসলাম তরফদার। এ তিনজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

হবিগঞ্জ পৌরসভার ভোটার জসিম সরকার বলেন, মিজানুর রহমানের রাজনীতি বেশি দিন না হলেও তাঁর কোনো বদনাম নেই। তিনি সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন কম সময়ে। ভোটার আবদুর রউফ বলেন, মিজান এই প্রথম জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তা নয়। এর আগে তিনি একই পৌরসভার কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া গত নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী প্রার্থী জি কে গউছের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় হন।

মিজানুর রহমান এলাকাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাঁর পরিষদের মেয়াদ অত্যন্ত কম। ১৪ থেকে ১৫ মাস। এ সময়ের ভেতর প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাবেন।

হবিগঞ্জ পৌরসভা মেয়র জি কে গউছ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করে। সোমবার উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।