সেই রেলসেতুতে ঝুঁকির আশঙ্কা, ৩ ঘণ্টা পর ছাড়ল ট্রেন

পাহাড়ি ঢলের কারণে রেলসেতু ঝুঁকিতে থাকায় বরমচাল রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়তে দেয়নি স্থানীয় লোকজন। কুলাউড়া, মৌলভীবাজার, ২৮ জুন। ছবি: প্রথম আলো
পাহাড়ি ঢলের কারণে রেলসেতু ঝুঁকিতে থাকায় বরমচাল রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়তে দেয়নি স্থানীয় লোকজন। কুলাউড়া, মৌলভীবাজার, ২৮ জুন। ছবি: প্রথম আলো

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশন এলাকার সেই বড় ছড়া রেলসেতু ঝুঁকির মুখে পড়েছে আশঙ্কা করা হয়েছে। ফলে শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে সিলেট থেকে চট্রগ্রামগামী আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন বরমচাল স্টেশনে পৌঁছালে ট্রেনটিকে আটকে দেয় স্থানীয় লোকজন।

পরে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীরা ওই রেলসেতুতে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে জানান। ফলে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বেলা পাঁচটার দিকে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এই ঘটনায় কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছিল। পরে তা চলতে শুরু করে।ৎ

এলাকাবাসী জানায়, বেলা একটার দিকে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন বরমচাল স্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় তাঁরা স্টেশনে ছুটে গিয়ে ট্রেনটিকে আটকায়। রেলসেতুটি ঝুঁকিতে থাকায় তাঁরা স্টেশন মাস্টার ও ট্রেনের চালকের কাছে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন না চালাতে অনুরোধ করেন। পরে মাস্টার ও চালক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ট্রেনটি স্টেশনেই আটকে রাখেন।

বিকেলে বরমচাল রেল স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার সফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাবাসীর আপত্তিতে ট্রেন আটকে রাখা হয়েছিল। পরে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের লোকজন গিয়ে সেতুটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তাঁরা সেতুটি ঝুঁকিমুক্ত থাকার কথা জানান। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও প্রকৌশলীরা কথা বলেন। পরে বিকেল ৪টা ৫৩ মিনিটে পাহাড়িকা ও ৫টা ৭ মিনিটে পারাবত ট্রেন ওই রেলসেতুটি অতিক্রম করে গন্তব্যে চলে যায়।

বরমচাল রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা ফাজু চৌধুরী, বাকু চৌধুরী ও জামাল হোসেন জানান, বুধবার সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে বড় ছড়ায় পানি বেড়ে গেছে, বেড়েছে পানির প্রবাহ। সেতুর নিচে থাকা দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগির ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, দুর্ঘটনার পর সেতুর নিচে পড়া বগিটি সরিয়ে ফেললে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। বগিতে পানি বাধা পাচ্ছে। সেতুর গার্ডারে (স্তম্ভ) পানির ধাক্কা লেগে এর নিচের মাটি সরে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সিলেট রেলস্টেশনের মাস্টার আফসার উদ্দিন বলেন, বড় ছড়া রেলসেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন সিলেটের মাইজগাঁও এবং চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী জালালাবাদ মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়া জংশন স্টেশনে আটকা পড়েছিল।

গত ২৩ জুন একই স্টেশনের পাশে সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে ট্রেনের পাঁচটি বগি রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে। এর মধ্যে একটি বগি বড় ছড়া সেতুর নিচে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চার জন যাত্রী নিহত হন। আহত হন আরও শতাধিক যাত্রী।