নিয়োগ-বাণিজ্যের অডিও ফাঁস, দুই শিক্ষক বরখাস্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের লোগো
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের লোগো

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক নিয়োগে নির্বাচনী বোর্ডের একজন আবেদনকারীকে অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে দুজন শিক্ষকের মুঠোফোনের কথোপকথন ফাঁস হয়েছে। অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ ওই দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

একই সঙ্গে প্রশাসন অনিবার্য কারণ দেখিয়ে প্রভাষক পদের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করেছে। আজ শনিবার নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই নিয়োগ-বাণিজ্যের অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ায় বোর্ড স্থগিত করা হলো।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরখাস্ত ও নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের আদেশ দেয়। বিকেলে প্রথম আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আবদুল লতিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বরখাস্ত হওয়া দুই শিক্ষক হলেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. রুহুল আমিন ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এস এম আবদুর রহিম। ২০১৭ সালে একই ধরনের অপরাধ করেছিলেন শিক্ষক রুহুল আমিন। সে সময় তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাজা দিয়েছিল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সন্ধ্যায় শিক্ষক রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আগেও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলাম। এবারও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় আমাকে ষড়যন্ত্রে ফেলা হয়।’ তিনি দাবি করেন, ফাঁস হওয়া অডিওতে তিনি ওই আবেদনকারীকে টাকা না দিতে বলেছেন।

শিক্ষক এস এম আবদুর রহিমের মুঠোফোন দুপুর থেকে সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যখনই প্রভাষক নিয়োগ হয়, তখনই আর্থিক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। শিক্ষকেরাই এ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। শিক্ষকদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের মুঠোফোনের কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়। পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে চলে দেনদরবার। এসব প্রভাষক নিয়োগে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। তবে এতে গুটিকয়েক শিক্ষকের নাম চলে আসে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গতকাল কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভা করে। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। এতে গোয়েন্দা সংস্থা বা বিচার বিভাগও থাকতে পারে। এর সঙ্গেও এ দুজন শিক্ষক ছাড়া আরও যাঁদের নাম আসবে তাঁদের প্রত্যেকের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।