কুলাউড়ায় দুর্ঘটনাকবলিত বগি উদ্ধার, ট্রেন চলাচল শুরু

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশন এলাকায় অবস্থিত বড় ছড়া রেলসেতুর নিচে পড়ে থাকা দুর্ঘটনাকবলিত একটি বগি আজ শনিবার উদ্ধার করা হয়েছে। এতে সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথে প্রায় আট ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এর ফলে বিভিন্ন স্টেশনে কয়েকটি ট্রেন আটকা পড়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।

২৩ জুন ওই স্থানে সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে ট্রেনের পাঁচটি বগি রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে। এর মধ্যে একটি বগি সেতুর নিচে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চার যাত্রী নিহত হন। আহত হন শতাধিক।

রেলওয়ে ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ছয়টার দিকে ঢাকা থেকে দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন বরমচাল স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর সেতুর নিচে পড়ে থাকা বগিটি উদ্ধারের কাজ শুরু হয়। এ কারণে ওই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীমঙ্গলে, চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস শমশেরনগরে এবং সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর কালনি এক্সপ্রেস ট্রেন মাইজগাঁও স্টেশনে আটকা পড়ে। বেলা দেড়টার দিকে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়।

এর আগে ২৭ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলের কারণে সেতুর নিচের ছড়ায় পানি বেড়ে গিয়েছিল। সেতুর নিচে বগি পড়ে থাকায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছিল। স্থানীয় লোকজন সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে আশঙ্কা করে। এ অবস্থায় গতকাল দুপুরে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন বরমচাল স্টেশনে পৌঁছালে এলাকাবাসী এটি আটকে রাখে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্টেশনে আরও কয়েকটি ট্রেন আটকা পড়ে। পরে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীরা গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেতুটি ঝুঁকিমুক্ত বলে জানান। এতে প্রায় তিন ঘণ্টা ওই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুলাউড়া রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক যাত্রী বিভিন্ন ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। সোহানুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, কালনি এক্সপ্রেসে তাঁর ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাওয়ার কথা। সৌদি আরব থেকে আসা এক আত্মীয়কে আনতে যাচ্ছিলেন। সকাল আটটার দিকে স্টেশনে পৌঁছে ট্রেন বিলম্বের কথা জানতে পারেন। সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে স্টেশনে বসা। কখন ট্রেন পৌঁছাবে কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার তা নিশ্চিত করে তাদের বলতে পারেননি। সোহানুরের মতো অন্য যাত্রীদেরও একইভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

রেলওয়ের কুলাউড়া সেকশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) জুয়েল আহমদ বেলা দুইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বড় ছড়া সেতুর নিচে পড়ে থাকা বগিটি ক্রেন দিয়ে ওপরে তুলে রেললাইনের এক পাশে রাখা হয়েছে। এখন নিচের ছড়া দিয়ে পানির প্রবাহ আর বাধাগ্রস্ত হবে না।

বরমচাল রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার সফিকুল ইসলাম বলেন, উদ্ধারকাজ শেষের পর বেলা ২টা ২ মিনিটে কালনি এক্সপ্রেস ও ২টা ৪৮ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন বড় ছড়া সেতু অতিক্রম করেছে।