কর্মসংস্থানে ভাতা বাড়ানোর দাবি প্রতিবন্ধী ফোরামের

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সদস্যরা। ছবি: সাইফুল ইসলাম রনি
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সদস্যরা। ছবি: সাইফুল ইসলাম রনি

চলতি বছরের বাজেটে প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ অপ্রতুল। এই বাজেট প্রণয়নের আগে প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা করেনি—এমনটা বলছে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম। প্রতিবন্ধীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা না বাড়িয়ে তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হোক, এমন দাবি জানিয়েছে ফোরাম।

আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সদস্যরা। চলতি অর্থবছর ২০১৯-২০-এ প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ফোরামের মহাসচিব সেলিনা আখতার। তিনি বলেন, বাজেট বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দ মূলত সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতাধীন নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন খাতে রাখা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর খাতে বাজেটের বরাদ্দ মাত্র ২ দশমিক ১৯ শতাংশ, যা মোট বাজেটের মাত্র ০ দশমিক ৩১ শতাংশ। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার তুলনায় এই বাজেট খুবই অপ্রতুল।

সেলিনা আখতার বলেন, ‘বাজেট প্রণয়নের পূর্বে অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময় করলেও আমাদের জানামতে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। তাহলে কীভাবে বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার প্রতিফলন ঘটবে?’ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির শিক্ষাকে গুরুত্ব দিলেও এবারের বাজেটে এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হলেও এ বছর মাত্র ১০ হাজার উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

এবারের বাজেটটি প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য ‘ভাতা নির্ভরশীল বাজেট’ বলে মন্তব্য করেছেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাজরানা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, এবারের বাজেটটি কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী নেওয়া হয়নি। প্রতিবন্ধী মানুষের ভাতার চেয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া দরকার। ভাতানির্ভর বাজেট প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উৎপাদনমুখী উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।

এ সময় জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সহসভাপতি মো. আনজামুল আলম বলেন, বাজেট বরাদ্দের দিকে তাকালে এটাকে সদকা, ফিতরার মতো মনে হয়। এই সরকার প্রতিবন্ধীবান্ধব হলেও প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোথায় যেন একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি মো. সাইদুল হক বলেন, একজন সাধারণ মানুষের চেয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাফেরা করতে বেশি খরচ হয়। তাই প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা বরাদ্দও জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সহসভাপতি দিলীপ কুমার ঘোষ। সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ, প্রতিটি বিভাগে প্রবীণ প্রতিবন্ধী নিবাস স্থাপন করাসহ ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।