'আমরণ অনশন করে ছাত্রলীগের পদ পাওয়া যাবে না'

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগসহ চার দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা। তাঁদের এই কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেছেন, কেউ যদি ‘ইচ্ছা করে’ রাস্তায় ‘আত্মহত্যা’ করতে যায়, সেই দায়-দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না।

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গত শুক্রবার থেকে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা আমরণ অনশন করছেন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেও কোনো আশ্বাস না মেলায় তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করেন। এ বিষয়ে আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘পদের জন্য অতীতে কি কেউ আমরণ অনশন করেছে? আমরণ অনশন কর্মসূচি দিয়ে ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবি পাওয়া যাবে না৷ তাঁদের প্রতি আহ্বান, তাঁরা ওখান থেকে উঠে আসুক, কর্মসূচি প্রত্যাহার করুক। তাঁদের মধ্যে যোগ্য কেউ থাকলে তাঁদের পদায়ন করার সুযোগ এখনো আছে। নিঃশর্তভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে আমাদের কাছে এসে যদি আবেদন জানায়, সে ক্ষেত্রে যোগ্য লোকদের বিবেচনা করা হবে।’

কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান বিষয়ে পদবঞ্চিতদের মুখপাত্র এবং ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রহমান ভাই আমাদের শ্রদ্ধেয় অভিভাবক। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, তাঁরা আমাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে। প্রাণের বিনিময়ে হলেও আমরা ছাত্রলীগকে কলঙ্কমুক্ত করব।’

এদিকে আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনে আজ রোববার আন্দোলনকারীদের অন্তত ৯ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা হলেন ছাত্রলীগের বিগত কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়বিষয়ক সম্পাদক আনন্দ সাহা পার্থ, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপসম্পাদক ইমদাদ হোসেন সোহাগ, কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপসম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক উপসম্পাদক কৃষ্ণ মজুমদার, উপপ্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ ও খন্দকার রবিউল ইসলাম, পরিবেশবিষয়ক উপসম্পাদক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এবং সহসম্পাদক এস এম মামুন।

পদবঞ্চিতদের অনশন ভাঙাতে আওয়ামী লীগ কিংবা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না—জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান বলেন, ‘কোনো সুযোগ নেই। ওদেরকে সোজা ওখান থেকে উঠিয়ে দেওয়া হবে।’

পদবঞ্চিতদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে পদ শূন্য ঘোষিত ছাত্রলীগের কমিটির ১৯ জনসহ সব ‘বিতর্কিত’ নেতার পদ ও নাম প্রকাশ, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে পদবঞ্চিতদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে কমিটিতে পদায়ন এবং মধুর ক্যানটিনে (১৩ মে) ও টিএসসিতে (১৯ মে) তাঁদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার।