ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধায় হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত

মোট ঋণের দুই শতাংশ এককালীন জমা দিয়ে একজন ঋণখেলাপি ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নীতিমালার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের এই আদেশ ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের এ সংক্রান্ত দুটি আদেশের বিরুদ্ধে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের পক্ষে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ওই স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে অর্থ বিভাগের করা আবেদনটি ৮ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ওই বিশেষ নীতিমালা সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে। এক রিট আবেদনের ধারাবাহিকতায় করা সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ মে হাইকোর্ট এক আদেশে ওই নীতিমালার কার্যক্রমের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। গত ২৪ জুন অপর আদেশে হাইকোর্ট স্থিতাবস্থার মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়ান। এই দুটি আদেশ স্থগিত চেয়ে অর্থ বিভাগের পক্ষে গতকাল সোমবার আপিল বিভাগে আবেদন (লিভ টু আপিল) করা হয়। আবেদনের ওপর আজ শুনানি হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

পরে বিশ্বজিৎ দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের দুটি আদেশের বিরুদ্ধে অর্থ বিভাগের করা আবেদনটি ৮ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন চেম্বার বিচারপতি। এই সময় পর্যন্ত হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করা হয়েছে।

ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনের অনিয়ম, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় ব্যাংক ঋণের ওপর সুদ মওকুফ সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত ও তা বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নে কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) গত ফেব্রুয়ারি মাসে রিট করে। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ অন্তবর্তীকালীন আদেশ দেন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকার ওপরে নেওয়া ঋণখেলাপিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে সেসব তথ্য আদালতে দাখিল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকার ওপরে নেওয়া ঋণখেলাপিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে সেসব তথ্যাদি সিলগালা অবস্থায় ২৪ জুন আদালতে দাখিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক।